News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১০ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১৩:৫৬, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

প্রস্তুত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, অনুমতি দিচ্ছে না জাপান

প্রস্তুত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, অনুমতি দিচ্ছে না জাপান

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একজোড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার উপহার দেয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান যেতে প্রস্তুত রয়েল বেঙ্গল টাইগার রণবী ও জ্যোতি। তবে জাপান সরকারের অনুমতি মিলছে না।

ইতোমধ্যেই এ দুটি বাঘ জাপানে পাঠানোর জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় নিউজবাংলাদেশকে জানান, এরই মধ্যে এদুটি বাঘ জাপানে পাঠানোর সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেয়েই ঢাকা চিড়িয়াখানা ও সাফারি পার্ক থেকে দুটো বাঘ এনে চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ বাঘ দুটির মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরির জন্য তাদের একই খাঁচায় রাখা হয়েছে। বাঘ পরিবহন উপযোগী করে দুটি খাঁচাও তৈরি করা হয়েছে। তাদের প্রস্তুতির বিষটি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ১৫ জুলাই প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কেএফএফ জেসমীন আখতার স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালককে বাঘ পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়। এরপর ১৬ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এ বিষয়ে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে। এ কমিটিই রণবী ও জ্যোতিকে জাপান পাঠানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে।

ঢাকা চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. মাকসুদুল হাসান হাওলাদার নিউজবাংলাদেশকে জানান, জাপানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে এ রয়েল বেঙ্গল টাইগার দুটি প্রস্তুত করা হয়েছে। দুটির মধ্যে একটি হলো ঢাকা চিড়িয়াখানার রনবীর, অন্যটি কক্সবাজার সাফারি পার্কের জ্যোতি।

তিনি আরো জানান, বদ্ধ অবস্থায় বাঘের আয়ু ১৫ থেকে ২০ বছর। ৩ থেকে ৪ বছর বয়সেই বয়োপ্রাপ্ত হয় বাঘশাবক। প্রতিদিনই গড়ে ৮ থেকে ১২ কেজি মাংস  খেতে দিতে হচ্ছে। সপ্তাহে একদিন জীবন্ত প্রাণি খেতে দেয়া হচ্ছে। যাতে করে এসব প্রাণীর মধ্যে বন্যভাব বজায় থাকে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক আরো জানান, জাপান সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন (কিভাবে পাঠানো হবে, কোন এয়ারপোর্টে নামবে) এসবসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুমোদন পাওয়ার পরেই বাঘ পাঠানো হবে।

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৯টি বাঘ আছে। এর মধ্যে ৪টি অসুস্থ, একটি বয়স্ক, আর ৪টির দুটি জুটি রয়েছে। সানি ও ঊর্মিলা এবং শুভ ও সখিনা জুটি চিড়িয়াখানার এখন মূল আকর্ষণ।

সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি বাঘ রয়েছে। আর ২০১২ সালে শ্যামলী থেকে র‌্যাবের উদ্ধার করা তিনটি বাঘ বন বিভাগের কাছে রয়েছে।

ঢাকা চিড়িয়াখানার (বৃহৎ প্রাণী শাখা) কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ নিউজবাংলাদেশকে জানান, রণবী ও জ্যোতিকে সব সময় নজরদারিতে রাখা হয়েছে।  প্রতিদিনই শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে।  দেয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে রয়েল বেঙ্গল টাইহার রয়েছে প্রায় ৫শ`। বেসরকারি জরিপে বলা হচ্ছে, বাঘের সংখ্যা ২শ`র বেশি নয়। ২০০৪ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা যৌথভাবে পরিচালিত জরিপ থেকে ৪৪০টি রয়েল বেঙ্গল টাইহারের উপস্থিতি মিলেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের বনে রয়েল বেঙ্গল টাইহার রয়েছে। অন্যদেশগুলো হলো- ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, ভুটান, নেপাল, রাশিয়া। এসব দেশে  প্রায় সাড়ে তিন হাজারে  বাঘ টিকে আছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মে মাসে জাপান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে জাপানকে এক জোড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এটি তারই ধারাবাহিকতা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়