News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:১০, ৭ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০৮:৪৮, ২৬ জানুয়ারি ২০২০

‘সমাজ বা গোষ্ঠী’ নয়, আমরা ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’

‘সমাজ বা গোষ্ঠী’ নয়, আমরা ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’

ঢাকা: টানা অবরোধ, শুক্র-শনিবার বিরতির হরতালের মধ্য দিয়ে চলছে বিএনপিসহ ২০ দলিয় জোটের কর্মসূচি। পাল্লা দিয়ে চলছে ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও ‘গণপিটুনির’ কার্যক্রম। গণতন্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ঘোষিত এ কর্মসূচির মধ্যে পেট্রোল বোমায় প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। যদিও জোটের পক্ষ থেকে এর দায় অস্বীকার করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে এ ধরণের হত্যা দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ ও গণপিটুনিতে দলীয় কর্মী হত্যার সংখ্যা বাড়ছে। 


এ নিয়ে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সমাধানের পথ বের করতে তাগিদ দিয়েছে তারা। অন্যদিকে ‘নাগরিক সমাজ’ নামে দেশের মধ্যে থেকে বিশিষ্টজনদের উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন তারা। নিজেদের ‘নাগরিক সমাজ’ ‘নাগরিক গোষ্ঠী’ নামে পরিচয় দিতে আপত্তি জানিয়েছেন।  

তাদের মতে, দেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তাতে দেশের সব মানুষই উদ্বিগ্ন। দেশের নাগরিক হিসেবে তারাও উদ্বিগ্ন। উদ্বিগ্ন নাগরিকদের পক্ষে কথা বলতে এবং এ অচল পরিস্থিতির সমাধান করতেই কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক উদ্যোগ নিয়েছেন।

হরতাল-অবরোধের মধ্যে চলমান সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে এবং রাজনৈতিক বিরোধ নিরসনে আলাপ-আলোচনা শুরুর উদ্যোগ নিতে ‘নাগরিক সমাজের’ পক্ষ থেকে গত মাসের ১৪ তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করেন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা। অরাজনৈতিক এ কমিটির সদস্যদের উদ্বেগ ও উদ্যোগের বিষয়ে ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, সহিংসতা বন্ধ ও আলোচনা শুরুর উদ্যোগ সমান্তরালভাবেই নিতে হবে।

গঠিত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তারা ব্যক্তিগত ব্যস্ততা বা অসুস্থতার কথা বলে মতামত দেয়া থেকে বিরত থেকেছেন। আবার কয়েকজনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার বার্তা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট অপারেটিং কোম্পানি। তবে কমিটির অন্যতম সদস্য সিএম শফী সামী ফোনে কথা বলেছেন নিউজবাংলাদেশের সঙ্গে।

টানা দুই মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় সাধারণ মানুষসহ দলীয় কর্মীদের প্রাণহানির ঘটনায় ‘নাগরিক সমাজ’ যে উদ্যোগ নিয়েছে, বর্তমানে তা কোন অবস্থায় রয়েছে? এর উত্তরের শুরুতে সিএম শফী সামী নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “আমি কোনো সমাজের বা গোষ্ঠীর সদস্য নই। চলমান পরিস্থিতে দেশের অন্যান্য নাগরিকদের সঙ্গে আমিও একজন উদ্বিগ্ন নাগরিক।”

এটিএম শামসুল হুদাকে প্রধান করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের তালিকায় আপনার নাম রয়েছে। আপনি বলছেন নেই। কোনটা সত্য?

এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি ওনাদের সঙ্গেই আছি। কিন্তু আপনারা ‘নাগরিক সমাজ’ নামের যে সংঘ বলতে চাচ্ছেন, আমরা তেমন কিছু করিনি। কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক এ পরিস্থিতিতে সমাধানের উদ্যোগ নিতে একত্রিত হয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন, সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। এটা কোনো গোষ্ঠী, বা সমাজ নয়।”

প্রসঙ্গ ছেড়ে কূটনৈতিক তৎপরাতার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগত মত দিচ্ছি। আমি মনে করি, আমাদের যে সমস্যা রয়েছে, বা চলছে তা আমাদের নিজেদের সমাধান করতে হবে। অন্য কারো অপেক্ষায় থাকার দরকার নাই। এর সমাধান আমাদেরই করতে হবে।”

আন্দোলনের নামে নাশকতার প্রসঙ্গে শফী সামী বলেন, “আরো একটি ব্যক্তিগত মতামত আমি দিচ্ছি- অধিকারের দাবিতে আন্দোলন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এর নামে কাউকে পুড়িয়ে মেরে আন্দোলন করার অধিকার কারো নেই। আমি মনে করি, এর সমাধান হওয়ার জন্য আগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। তার পরে সমাধানে বসতে হবে।”

আপনারা প্রথম যে সভা করেছেন তাতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ছিলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার ফোনালাপের বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দেখুন, সেই সেমিনারে শুধু মান্না সাহেব নয়, আরো অনেকে ছিলেন। ড. কামাল, মুজাহিদুল ইসলাম সেমিলসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। সেমিনারে তারা ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। পরবর্তীতে যে কমিটি করা হয়েছে, তখন আমরা বলেছি আমাদের কমিটিতে কোনো রাজনৈতিক দলের কেউ থাকবে না। যারা একেবারে রাজনীতির বাইরে তাদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাহমুদুর রহমান মান্নার বিষয়ে আমি বলতে চাই, পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে যা জেনেছি, তা যদি সত্য হয় তাহলে তিনি অনেক গর্হিত অপরাধ করেছেন। এটা অন্যায়। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অত্যান্ত গুরুতর অভিযোগ, তা প্রমাণিত হলে অবশ্যই তিনি গর্হিত অপরাধ করেছেন।”


নিউজবাংলাদেশ.কম/জেএস/এজে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়