News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:০৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
আপডেট: ০১:১৯, ১ মার্চ ২০২০

বার বার খালেদাকে নাজেহাল গণতন্ত্রের অপমান

বার বার খালেদাকে নাজেহাল গণতন্ত্রের অপমান

নিউজবাংলাদেশ.কম রিপোর্ট

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাও, খাবার সরবরাহে বাধা, কার্যালয় লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া এবং বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও ডিশ লাইন বিচ্ছিন্নের (বর্তমানে সংযোগ রয়েছে) ঘটনা অগণতান্ত্রিক। রাজনীতি বিশ্লেষকরা এমনটিই মনে করছেন। ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ ধরনের আচরণ গণতন্ত্রের জন্য অপমানজনক বলেও কেউ কেউ বলেছেন।
তারা বলছেন, খালেদা জিয়া বা বিএনপি জোটের নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে চাপে রাখতে কৌশল হিসেবে সরকার এমন উদ্যোগ নিতে পারে। তবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে সুফল পাওয়া যায় না। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে একদিকে যেমন সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, তেমনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে।
বর্তমান সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির দিন গত ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালনে ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। ওই দিনটিকে ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক উত্তাপ। ৫ জানুয়ারিতে বিএনপি জোটের পূর্বঘোষিত সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ৩ জানুয়ারি রাত থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের তার নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা হয়। এর প্রতিবাদে ৬ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। টানা অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে মাঝে মধ্যেই বিরতি দিয়ে চলছে সারাদেশে হরতাল। ২০ দলের টানা অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে বিএনপি-জামায়াতের ২৫ জনের বেশী নেতাকর্মী নিহতসহ দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমায় দগ্ধ মোট ৯০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। এ সব ঘটনায় আহতের ঘটনাও অনেক।
এদিকে সারাদেশের ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচির মধ্যেই দুই সপ্তাহ গুলশান-২-এর ৮৬ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাসায় রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় থাকেন খালেদা জিয়া। প্রথমদিকে কার্যালয়ের সামনের সড়কে ইট-বালুর ট্রাকের পাশাপাশি জলকামান ও পুলিশের কয়েকটি পিকআপ ভ্যান আড়াআড়ি করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে ইট ও বালুর ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হলেও জলকামান এবং পুলিশের ভ্যান দিয়ে রাস্তাটি অবরুদ্ধ রাখা হয়। যানবাহন এমনকি সাধারণ মানুষের চলাচলও ছিল বন্ধ। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দেয়। বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ করা হলেও সরকার বরাবরই তা অস্বীকার করে। এ অবস্থায় গত ১৮ জানুয়ারি গভীর রাতে হঠাৎ করেই তার কার্যালয়ের সামনে রাখা জলকামান, পুলিশের পিকআপ ভ্যান ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। তবে নিয়মিত পুলিশি পাহারার পাশাপাশি সড়কটির দুই পাশে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।
এরপর ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অবরোধের পাশাপাশি হরতালের কারণে তা স্থগিত করে শুক্রবার-শনিবারে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবিতে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশের সড়কে বেশ কিছুদিন ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরীক্ষার সময় হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩

ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় ঘেরাওয়ের চেষ্টা করে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ। তবে পুলিশ তাদের কার্যালয়ের কাছে যেতে দেয়নি। এদিকে সংগঠনটির কর্মী পরিচয়ে মফিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওইদিন একটি পিস্তল হাতে নিয়ে কার্যালয়ের সামনে যান। অস্বাভাবিক আচরণকারী ওই ব্যক্তি খালেদা জিয়াকে খুন করার হুমকি দেন। এ বিষয়ে গুলশান কার্যালয়ে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, উনি একজন পাগল। কোনো সুস্থ মানুষ এভাবে এখানে আসবে নাকি। অনেক কষ্ট করে তাকে সরানো সম্ভব হয়।
একই দাবিতে বেশ কয়েক দিন খালোদা জিয়ার বাসার সামনে ও আশপাশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতিতে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে ঢিল ছোড়েন পরান সরকার নামে এক যুবক। পরে ওই যুবককে আটক করে নিয়ে যান গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। তিনি সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের বাসিন্দা বলে জানা যায়। ওইদিন তিনি কার্যালয়ের সামনে ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে একটি ইটের টুকরো ভেতরের দিকে ছুড়ে মারেন। ভবনের সামনের দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখা খালেদা জিয়ার আলোকচিত্রের পাশে গিয়ে লাগে ঢিলটি।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিদ্যুৎ ও ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। যদিও পরে সংযোগ দেওয়া হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়