আদালতে নিরাপত্তা, খালেদার ‘নেই’
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য দিন বুধবার। এ উপলক্ষে আলিয়া মাদরাসা মাঠসহ পুরো বকশিবাজারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি এখনো। তাই তিনি এদিন আদালতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে বুধবার।
এজন্য বকশিবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত আদালতসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। বিপুল সংখ্যক বিজিবি-র্যাব-পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে আদালত চত্বরে। পুরো বকশিবাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে।
খালেদার জিয়ার হাজিরা ও নিরাপত্তার বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান নিউজবাংলাদেশকে বলেন, ‘হরতাল কর্মসূচি চলছে। হরতালে সাধারণত বিএনপি চেয়ারপারসন বের হন না। এছাড়া চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা তো বলেছেনই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে তিনি আদালতে যাবেন।’
নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় খালেদা জিয়া আদালতে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা একাধিকবার দাবি করেছে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে। খালেদা জিয়া আদালতেক যেতে চাইলে যেতে পারেন।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বুধবার নিউজবাংলাদেশকে বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) বললে তো হবে না। পুরো গুলশান নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে।’
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় তার গাড়িবহর ঘিরে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল মিছিল করলে ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় পুলিশও যোগ দেয়। পরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপ নিলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো বকশিবাজার এলাকা। বিএনপির অভিযোগ, হামলার লক্ষ্য ছিল খালেদা জিয়া।
এর পর থেকে আর আদালতে যাননি খালেদা জিয়া। এ অবস্থায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার ধার্য তারিখে আদালত খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। বুধবার এ মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়।
গ্রেপ্তার আদেশের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দাকার মাহবুব হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিরাপত্তা পেলে তিনি (খালেদা জিয়া) আদালতে যাবেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতিদিন তার রাজনৈতিক কার্যালয় ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ঘেরাও করে রাখছে। এমনকি বর্তমান সরকারের একজন ক্ষমতাসীন মন্ত্রীর নেতৃত্বেও তার বাড়ি ঘেরাও করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।’
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় অনেকদিন ধরে আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।
রাজধানীর বকশিবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে মামলা দুটির বিচার কাজ চলছে।
বুধবার এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় খালেদা জিয়াকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। তা না হলে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে। যদিও বুধবার পর্যন্তও গ্রেপ্তারের আদেশের কপি গুলশান থানায় পৌঁছানোর খবর পাওয়া যায়নি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ আরআর/ এনএইচ/এফএ
নিউজবাংলাদেশ.কম