News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৫০, ৩ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০২:৪৪, ২২ জানুয়ারি ২০২০

টাকার বদলে চিনি নিচ্ছেন মোচিকের অবসরপ্রাপ্তরা

টাকার বদলে চিনি নিচ্ছেন মোচিকের অবসরপ্রাপ্তরা

ঝিনাইদহ : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল বেশ পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার দেনা রয়েছে এ মিলটির। এরই মধ্যে যারা অবসরে চলে গেছেন তারা তাদের পাওনা টাকার পরিবর্তে চিনি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, চরম অর্থ সংকটে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারী। কৃষকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ক্ষুদ্ধ কৃষক-কর্মচারীদের তোপের মুখে পড়েছে ইক্ষু সম্প্রসারণ ও অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি না করতে পারায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তারা আশঙ্কা করছেন, যে কোনো সময় জোট বেঁধে কৃষকেরা তাদেও ওপর হামলা করতে পারে। ক্ষুব্ধ অনেক কৃষক রোপণ করা আখের জমি ভেঙে দিচ্ছে। জানা গেছে, চলতি ২০১৪-১৫ মাড়াই মৌসুমে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৭শ ৬৭ মেট্রিক টন উৎপাদিত চিনিসহ মোট ১৮ হাজার ২শ ১১ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় গোডাউনে পড়ে রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৬৭ কোটি টাকা।

আরো জানা গেছে, ২০১৩-১৪ মৌসুমের চিনি রয়েছে ১০ হাজার ৬শ ৯৬ মেট্রিক টন। ২০১২-১৩ মৌসুমের উৎপাদিত চিনি রয়েছে ৭শ ৪৭ মেট্রিক টন। এসব চিনি গোডাউনে নষ্ট হতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে ১২০ কার্য দিবসে ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যাত্র শুরু করে মিলটি।

১৯৬৮ সালে আখ মাড়ায়ের মধ্যে দিয়ে প্রথম যাত্রা শুরু হওয়া এ মিলটির চিনি বিক্রি না হওয়ায় শ্রমিকদের ৩ মাসের অভার টাইম ও ২ মাসের বেতন ভাতা বাবদ দেনা সাড়ে ৩ কোটি টাকা এবং কৃষকদের ৪ কোটি টাকা। এছাড়া পুঞ্জিভূত দেনা রয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।

মিল কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানায়, দেশের সরকারি মিলগুলোর উৎপাদিত চিনি থেকে বেসরকারিভাবে বাজারজাতকৃত চিনির দাম কম। এরই ফলে ডিলাররা এ প্রতিষ্ঠান থেকে চিনি উত্তোলন করছে না।

তারা আরো জানায়, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন কেজি প্রতি চিনির দাম ১০ টাকা কমিয়ে দেয়ার পরও চিনি বিক্রি হচ্ছে না। মিলগেটে সাড়ে ৩৭ টাকা কেজি এ চিনি বিক্রি না হওয়ায় সঙ্কটে পড়ে গেছে মিল কর্তৃপক্ষ।

মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে তাদের কাছে ১৮ হাজার ২শ’ ১১ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে। যার মুল্য প্রায় ৬৭ কোটি টাকারও বেশি। সর্বশেষ চলতি ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৬ হাজার ৭শ’ ৬৭ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করা হয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত চিনির সবই অবিক্রিত রয়েছে।

এদিকে চিনি বিক্রি না হওয়ায় ঠিকমতো বেতন পাচ্ছে না মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন আখচাষিরা। দেলোয়ার আরো জানান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কৃষক-কর্মচারীদের কিছু টাকা পরিশোধ করা হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/প্রতিনিধি/এটিএস

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়