দিনাজপুরে সরকার অনুমোদিত ইন্সুরেন্স কোম্পানির প্রতারণা
দিনাজপুর: জেলায় বিভিন্ন স্থানে সঞ্চয়ী সংস্থা কিংবা লাইফ ইন্সুরেন্সের নামে চলছে প্রতারণা। জমাকৃত টাকার দ্বিগুন কিংবা তিন গুন ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকের টাকা নিয়ে গাঢাকা দিচ্ছে কোম্পানিগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামে-বেনামে গড়ে ওঠা এসব কোম্পানিই শুধু নয়, সরকার অনুমোদিত লাইফ ইন্সুরেন্সের নামেও চলছে প্রতারণা। সরকার অনুমোদিত সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্সের নামে প্রতারণা করে গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে ২ ট্রাক মালামালসহ আটক হয়েছেন ব্যবস্থাপক ও অন্যান্য কর্মকর্তা। এরপর পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রাহকরা নিউজবাংলাদেশকে জানায়, তাদেরকে বোঝানো হয়েছিল সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্সে টাকা জমা দিলে ৩ বছরে দ্বিগুন এবং ৫ বছরে ৩ গুন টাকা ফেরত দেয়া হবে। যখন ইচ্ছা তারা জমাকৃত টাকা তুলতেও পারবেন। এ প্রস্তাব দিয়ে এ জেলায় কোম্পানিটি প্রায় সাড়ে ৪শ’ গ্রাহক তৈরি করে।
এরই মধ্যে কোনো কোনো গ্রাহকের ৪-৫ বছরের টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই স্বাধীনতা দিবসের বন্ধের দিন কোম্পানিটি লিলি মোড়স্থ অফিসের বাইরে স্থান বদলের দুটি নোটিশ টানিয়ে দেয়। এরপর তারা অফিসের মালপত্র নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।
নোটিশ দেখে কয়েক জনের সন্দেহ হলে তারা কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে। তাদের খাপছাড়া কথা শুনে একপর্যায়ে জনতা ট্রাকের মালামাল আটকে দেয়। এসময় সব গ্রাহক এসে কোম্পানির ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামসহ সবাইকে অবরোধ করে ফেলে।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদেরকে আটক করে রাখা হলেও ব্যবস্থাপক ছাড়া অন্য কেউ টাকা ফেরত দিয়ে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। রাতে পুলিশ রফিকুল ইসলামসহ ৩ জনকে থানায় নিয়ে যায়। রফিকুল ছাড়া বাকি দুজন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
গ্রাহক বিলকিস ও সন্ধ্যা রানী নিউজবাংলাদেশকে জানান, ৩ বছর পর টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তাদেরকে টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে না। দ্বিগুন-তিনগুন নয়, আসল টাকাও তাদেরকে ফেরত দেয়া হচ্ছে না।
ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাদেশকে বলেন, তিনি অফিসের স্টাফ। কেউ তাকে সরাসরি টাকা জমা দেয়নি। তাই এ টাকার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
তিনি আরো বলেন, অফিসটি স্থানান্তরিত হয়ে সৈয়দপুরে যাচ্ছে। আর গ্রাহকদের টাকা গ্রহণের জন্য রামনগরে অফিস করা হয়েছে। নিজেদের কার্যক্রম সুবিধার জন্য অফিসটি স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
কোতয়ালী থানার ওসি একেএম খালেকুজ্জামান নিউজবাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি প্রমাণিত হয়, কোম্পানিটি গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল তবে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম