সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নানোৎসব শুরু
ঢাকা: সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী পুণ্যস্নানোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পুণ্যার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে এ উৎসব। শুক্রবার ভোরে এ উৎসবের লগ্ন শুরু হয়েছে, যা শেষ হবে শনিবার ভোরে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে এ উৎসব উদযাপিত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনোবাসনা পূরণে ও পাপ মোচনের আশায় মহাঅষ্টমী স্নানে অংশ নেয়।
স্নান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশের সকল স্থানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাই পুণ্যার্থীরা নির্বিঘ্নেই স্নান সম্পন্ন করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ স্নানোৎসবের সংবাদ পাঠিয়েছে জেলা প্রতিনিধিরা:
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের জোড়গাছ ঘাটে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্রের তীরে দুই কিলোমিটারব্যাপী বসে অষ্টমী মেলা। এছাড়া কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নুন খাওয়াসহ ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন পয়েন্টে স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের হিন্দু পুণ্যার্থীরা পুরাতন ব্রহ্মপুত্র (যমুনা) নদের ঘুড়কা মহাশ্মশানঘাটে স্নান অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে মন্দিরে ভক্তিমূলক গান ও গীতা পাঠ করা হয়।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার লাঙ্গুলিয়া নদীতে স্নান উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার দ্বিমুখা কালীমন্দির পূজা উদযাপন কমিটি ওই স্নানের আয়োজন করে।
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকা সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীতে অষ্টমী স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ অষ্টমী স্নান উৎসব পরিষদ এ স্নান উৎসবের আয়োজন করে। স্নান উপলক্ষে ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে মেলা বসেছে।
চাঁদপুর: চাঁদপুরের পুরানবাজার এলাকায় মেঘনা নদীতে মহাঅষ্টমী স্নান সম্পন্ন হয়েছে। স্নান উপলক্ষে মদন মোহন মন্দির ও মহাঅষ্টামী স্নান কমিটি সার্বিক বিষয় দেখভাল করে।
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল): ভূঞাপুর শহরের পার্শ্ববর্তী লৌহজং নদীতে অষ্টমীর পুণ্যস্নান ও কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে নদী পাড়ে অষ্টমী মেলার আয়োজন করা হয়।
লাঙ্গলবন্দ (নারায়ণগঞ্জ): এদিকে জেলার বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ মহাঅষ্টমী পূণ্যস্নান উৎসব শুক্রবার ভোররাত থেকে শুরু হবে। প্রতিবারের মতো এবারও দেশ-বিদেশ থেকে লাখ লাখ পূণ্যার্থী অংশ নেবে এ স্নান উৎসবে।
মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিতোষ কান্তি সাহা জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে মহাষ্টমী স্নান উৎসবের লগ্ন শুরু হবে। লগ্ন শেষ হবে শনিবার ভোর ৬টা ৫৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে।
তিনি বলেন, এবারও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়া ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, ভুটানসহ অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পূণ্যার্থী ১৩টি ঘাটে স্নানোৎসবে অংশ নেবে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূণ্যার্থীরা লাঙ্গলবন্দে আসতে শুরু করেছে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
আয়োজকরা জানায়, এবার স্নানোৎসবে প্রায় ২০ লাখ পূণ্যার্থী অংশ নেবে। পূণ্যার্থীদের স্নান উৎসব সম্পন্ন করতে ব্রহ্মপুত্র নদের কচুরী পানা পরিষ্কার, নারীদের পোশাক বদলানোর কক্ষ ও বিশুদ্ধ পানির জন্য ৫০টি টিউবওয়েল, ৭০টি টয়লেট এবং ৩৫টি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র ও বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া স্নান উৎসব উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফই/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম