ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এক সপ্তাহে ৩ শিশুর মৃত্যু
ঝিনাইদহ: জেলার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া,ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এক সপ্তাহে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে মারা গেছে তিনটি শিশু।
এ হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছে ৫০ জন শিশু। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ৩৪ ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬টি শিশু ভর্তি রয়েছে।
হাসপাতালটিতে শুধুমাত্র মহিলা মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে মাত্র আটি শয্যা। ফলে রোগীর চাপ কয়েকগুন বেশি থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। পা ফেলার জায়গা থাকছে না কারো। শয্যা না থাকায় রোগীদের স্থান হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে, বারান্দায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একশয্যায় দুই থেকে তিনটি শিশু রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে করে সুস্থতার বদলে রোগীরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুদের জন্য নেই নির্ধারিত কোনো শয্যা।
প্রতিদিন এ হাসপাতালের জরুরি ও বহিঃবিভাগের মাধ্যমে দুশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে দুশতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে তিনটি শিশু। গত ২৩ মার্চ সকালে একটি ও ১৯ মার্চ সকালে ও রাতে দুটি শিশু মারা যায়। দিনের তুলনায় রাতেই বাড়ছে ভর্তিকৃত শিশু রোগীর সংখ্যা।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শিশু রোগীর অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, দিনের পর দিন হাসপাতালে থাকলেও একটা শয্যাও মিলছে না। ফলে বাচ্চাদের অসুস্থতার বদলে বাচ্চারা বেশি অস্বুস্থ হয়ে পড়ছে। তবুও কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এখন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর চাপ অনেক বেশি। বিশেষ করে দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে ঠাণ্ডা পড়ছে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি অভিভাবকদের অসচেতনতাও এর জন্য অনেক দায়ী। আর রোগীর চাপ এতই বেশি যে চিকিৎসা সেবা দিতে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে।”
তিনি জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদেরকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানো হচ্ছে। নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের নেবুলাইজেশন করানো হচ্ছে। পাশাপাশি সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে, যাতে করে ছোট শিশুরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারে।
তিনি আরো জানান, চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি অভিভাবকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যেমন তাদেরকে বলা হচ্ছে, বাচ্চাদের খাওয়ানোর আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নিতে হবে, পানি বিষুদ্ধ করে খাওয়াতে হবে, হাঁচি-কাশি থেকে বাচ্চাদেরকে দূরে রাখতে হবে। সর্বোপরি তাদেরকে সব বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হচ্ছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাহ্ আলম জানান, রাতের বেলায় ভর্তিকৃত শিশু এরাগীর চাপ একটু বেশি থাকে। পাশাপাশি দিনে ও রাতে ছোটদের পাশাপাশি বয়ষ্করাও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ
নিউজবাংলাদেশ.কম