হত্যা-নাশকতার আন্তর্জাতিক তদন্ত চায় ২০ দল
ঢাকা: জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সকল বিচার বহির্ভূত হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও পেট্রোল বোমাসহ সকল নাশকতার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহবান জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, “জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্তের মাধ্যমে সকল গণহত্যা, বিচার বহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, পেট্রল বোমার নাশকতা, সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সহিংসতায় জড়িতদের শনাক্ত ও বিচার করা হউক। আমরা
বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল পর্যায়ে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে সকল কর্মসূচি পালনের আহবান জানিয়ে এসেছি। শাসক শ্রেণিই গণআন্দোলনকে কলুষিত করে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড হিসেবে রূপদানের কুৎসিত অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।”
আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে
বিএনপির এই যুগ্মমহাসচিব তার বিবৃতিতে অভিযোগ করে বলেন, “দমন-পীড়ণের নোংরা অজুহাত
সৃষ্টির কুমানসেই সরকারি সন্ত্রাসীরা পেট্রল বোমাসহ সকল নাশকতা চালিয়ে
আন্দোলনকারীদের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী পেট্রল
বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেলসহ ধরা পড়লেও সরকারি নির্দেশে তাদের ছেড়ে দেয়া
হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে বাসা থেকে
গ্রেফতার করে পেট্রল বোমাবাজ সাজানো হচ্ছে; নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায়
জঘন্য কায়দায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে।”
লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ ও বিভিন্ন নৃশংস কায়দায় আন্দোলনকারীদের হত্যাকে জায়েজ করার জন্যই-নাশকতার এই নীল নক্শার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
কিন্তু শাসকশ্রেণির স্মরণে রাখা উচিৎ রাষ্ট্রীয় শ্বেতসন্ত্রাস, গণহত্যা ও সহিংসতার বিভৎস পরিবেশ তৈরি করেও জনগণের ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করা যাবে না। জনগণের প্রবল শক্তির কাছে নতি স্বীকার করা
ছাড়া অবৈধ সরকারের কোনও গত্যন্তর থাকবে না।”
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন বলেন, “নির্যাতনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে এই আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে অগ্রসরমান। এই আন্দোলন গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। অত্যন্ত সংযম ও সাহসিকতার সাথে শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত করার কন্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে বিজয় সুনিশ্চিত করার কোনও বিকল্প নেই। ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক পরিবর্তনে বৃহৎ জাতীয় স্পৃহা পূরণে আজ সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ।”
বিএনপির এই আপদকালীন মুখপাত্র বিবৃতিতে আরও বলেন, “গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, বাক-ব্যক্তি ও গণমাধ্যমসহ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে গড়ে উঠা এই আন্দোলনের মূলমন্ত্র। এই আন্দোলনের বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জাতীয় আকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব, অন্যথায় একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার কবলে নিপতিত হবে দেশ ও জাতি।”
বিএনপির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “প্রকৃত অর্থে ক্ষমতা চিরস্থায়ীকরণের আওয়ামী উগ্র বাসনাই চলমান রাজনৈতিক সংকটের মূল কারণ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্তির পক্ষে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তই জাতীয় জীবনে দুর্যোগের উৎপত্তি। অতএব, দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে রাজনৈতিক সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যেই বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ সংগ্রামী দেশবাসীকে আহবান জানান তিনি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম