ভাতিজির লেখাপড়া বন্ধ করতে হিংসুটে চাচার কান্ড!
লালমনিরহাট: লেখাপড়া বন্ধ করতে হবে। না হলে চালানো হবে নির্যাতন। চাচার এ নির্দেশ না মানায় মারধর করা হলো এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহমুদা আক্তারকে। চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েও থেমে থাকেনি সে। এ অবস্থায় শনিবার সে কৃষিশিক্ষা পরীক্ষা দিয়েছে।
সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কিসামত হারাটি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কান্নাজড়িত কন্ঠে নিউজবাংলাদেশকে জানায়, পড়ালেখা করে সে ডাক্তার হতে চায়। তার এ পথচলা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি তার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।
সে আরো জানায়, তাকে হুমকি দেয়া হয়, পড়ালেখা করলে মেরে তার হাত-পা ভেঙে দেয়া হবে। তাদের কথা না শোনায় শেষ পর্যন্ত তার ওপর চালানো হয় শারীরিক নির্যাতন।
মাহমুদার বাবা ফকিরটারী গ্রামের রাজমিস্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান নিউজবাংলাদেশকে জানান, মাহমুদা লেখাপড়ায় বেশ ভালো। কিন্তু তার ভাই নবিয়ার রহমান ও নুরুল হক এবং ভাতিজা শাহীন ও সাজ্জাদ তার লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে চায়। এজন্য তারা মাহমুদার ওপর প্রায়ই নির্যাতন করে।
তিনি আরো বলেন, মাহমুদা যাতে চলতি এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারে এজন্য তারা তাকে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এখন সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। জেএসসি পরীক্ষা সময়েও তারা মাহমুদাকে পিটিয়ে আহত করেছিল।
মাহমুদা আক্তারের মা রওশন আরা বেগম নিউজবাংলাদেশকে জানান, মাহমুদা লেখাপড়া করতে চায়। আর এজন্য তাকে বারবার নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তিনি এর বিচার চান।
হারাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার সিরাজুল ইসলাম রানা নিউজবাংলাদেশকে বলেন, মাহমুদা আক্তারের নির্যাতনের খবর শুনে তিনি মাহমুদাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন। চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যও দিয়েছেন। যারা তাকে নির্যাতন করেছে তারা যাতে বিচারের সম্মুখীন হয় সেজন্য তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. কেএম মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাদেশকে বলেন, মাহমুদার সুচিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত ডাক্তারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শনিবার সকালে তিনি হাসপাতালে রাউন্ডে গিয়ে জানতে পারেন মাহমুদা এসএসসি পরীক্ষা দিতে গেছে। পরীক্ষা শেষে সে পুনরায় হাসপাতালে ফিরে আসবে।
সদর থানার ওসি এএইচএম মাহফুজুর রহমান নিউজবাংলাদেশকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে ছুটে যায়। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপাওে খোঁ নিতে হারাটি ইউনিয়নের ফকিরটারী গ্রামে নবিয়ার রহমান ও নুরুল হকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তারা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম