একটি সেতু, বদলে দিতে পারে ৮ গ্রামের চিত্র
খাগড়ছড়ি: স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও নির্মাণ হয়নি দিঘিনালা উপজেলার মেরুং বাজারস্থ মাইনি সেতু। অথচ এ সেতু নির্মাণ হলে বদলে যেত ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী ও ৮ গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা।
বারবার সরকার বদল হলেও বদলায়নি এ ৮ গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান। মেরুং বাজার সংলগ্ন হাজাছড়া, পণছবি, ৪ কি.মি প্রশিক্ষণ টিলা, অপরূপ হেডম্যান পাড়াসহ আশপাশের ৮ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অথচ এ সেতু নির্মাণ হলে বদলে যেত তাদের জীবনযাত্রার মান।
হাজাছড়ার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. দুলাল নিউজবাংলাদেশকে জানান, ৮ গ্রামের মানুষজনের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম মাইনি নদী। অথচ এ নদীর ওপর নেই কোনো সেতু। এ সেতুর দাবি এখন গ্রামবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
মেরুংয়ের বাসিন্দা মখলেসুর রহমানা নিউজবাংলাদেশকে জানান, নানা সময়ে এ সেতু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অথচ বাস্তবায়ন হয়নি। নির্বাচনের আগে গ্রামবাসীকে আশ্বাস বাণী শোনানো হলেও এ সেতু নির্মাণে এরপর আর কোনো উদ্যোগ কেউ গ্রহণ করেনি।
তিনি আরো জানান, অথচ মাইনি নদীর ওপারের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ৮ গ্রামের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন, ধান, কলা, কাঁঠাল ও শীতকালীন সবজি উৎপাদন করে উপজেলার চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ পূরণ করে থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নানা সময়ে রাজনৈতিক নেতারা আশ্বাস দিয়েই পার পেয়ে গেছেন। শুধু নির্বাচন এলেই তাদের মুখে আশ্বাসের কথা শোনা যায়। নির্বাচন হয়ে গেলে আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
তারা জানান, একটি সেতুর অভাবে তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ তা পাওয়ার অধিকার তাদের আছে। আর এ অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
বর্ষা এলেই ৮ গ্রামের অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দেয়। এতে করে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৭ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী।
অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর আলোকিত জীবন গড়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। এরই পাশাপাশি রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। সেতু না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে এখানে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্মও অনেক বেশি।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছোট মেরুং উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি কে.এম ইসমাইল হোসেন নিউজবাংলাদেশকে জানান, গত বছর মাইনি নদীতে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ সেতু নির্মাণে স্থানীয়দের দাবি যৌক্তিক। মন্ত্রণালয়ে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম