জাহাঙ্গীরের বাড়িতে শোকের মাতম
যশোর: চাঁদপুরে ট্রাকে পেট্রল বোমা হামলায় নিহত যশোরের চালক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে আশপাশের প্রতিবেশ।
১০ জনের পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অকাল মৃত্যুতে কেমন করে চলবে, তাই ভেবে দিশেহারা পরিবার।
জানা যায়, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কিসমত ইলিশপুর গ্রামে বাড়ি জাহাঙ্গীরের। মঙ্গলবার ট্রাকের মালিক শরীফ হোসেন গরু নিয়ে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য ভাড়া ঠিক করেন। চালক জাহাঙ্গীর যেতে রাজি না হলেও মালিকের পিড়াপীড়ির কারণে যেতে বাধ্য হন।
বাগআচঁড়া সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আজিজুর রহমান ভুট্টো জানান, “বুধবার চট্টগ্রাম থেকে টমেটো বোঝাই করে ফেরার পথে চাঁদপুরের চৌরাস্তায় দুর্বৃত্তদের পেট্রল বোমা হামলার শিকার হন তারা। এতে দগ্ধ হন চালক জাহাঙ্গীর, গাড়ির মালিক শরীফ হোসেন চালকের সহকারী রুবেল এবং একজন গরু ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম। হাসপাতালে নেবার পর মারা যান চালক জাহাঙ্গীর। শরীফ, রুবেল ও খোরশেদের বাড়ি যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বারাকপুর শেখ পাড়ায়।”.
বুধবার রাতে ঘটনার পর যখন জাহাঙ্গীরের স্বজনরা খবরটি পায় তখন থেকে শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি, এখনও থামেনি তা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই সন্তান জাহিদ(৫) ও সাইদকে(২) জড়িয়ে ধরে স্ত্রী খাদিজা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের মৃত্যকে মেনে নিতে পারছেন না জাহাঙ্গীরের বৃদ্ধা মা সাজেদা বেগম। বারবার বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘আমাদের এখন কি হবে। আমরাতো রাজনীতি করিনে। আমাদের দায়িত্ব কে নেবে?’
জাহাঙ্গীরের বড় বোনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ছোটবেলা থেকেই মামার বাড়িতে থাকেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে সে। তার সকল খরচ বহন করতেন মামা জাহাঙ্গীর। রাজিয়ার বিলাপ আর থামছে না।
বাগআচঁড়া সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান কিনা জানান, “জাহাঙ্গীরের বাবা ভ্যান চালক সুরত আলিকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় শ্রমিক নেতারা জাহাঙ্গীরের লাশ গ্রহণ করার জন্য চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম