বিধবা নারীকে ধর্ষণ
বাগেরহাট: বাগেরহাটের রামপালে এক বিধবা নারীকে (৩৩) অপহরণের পর নৌকায় নিয়ে চার যুবক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাতে রামপাল উপজেলার কুমারখালী গ্রাম থেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় স্থানীয় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে রামপাল উপজেলা পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামের কালিগঞ্জ নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। মঙ্গলবার রাত দুটায় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দেবর (অনুপ রায়) বাদী হয়ে রামপাল থানায় অজ্ঞাতনামা চার যুবকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের বড় সন্নাসী ফুলতলা পাড়া গ্রামের প্রয়াত নির্মল রায়ের স্ত্রী। তার ১২ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান আছে।
বাগেরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, বৃহষ্পতিবার বিকেলে রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের বড় সন্নাসী ফুলতলাপাড়া গ্রাম থেকে তিনি ও তার দেবর পার্শ্ববর্তী ডাকরা গ্রামের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে (মহানামযজ্ঞ) যান। সেখানে গান শোনার এক পর্যায়ে রাত দশটার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে গেলে অন্ধকারে আগেই ওঁৎ পেতে থাকা কয়েক যুবক তাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন তার সঙ্গে থাকা দেবর তাদের বাধা দিতে গেলে ওই যুবকরা তাকে বেদম প্রহার করে ফেলে রাখে আর ওই নারীকে তুলে নদীতে একটি নৌকায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তারা অসুস্থ অবস্থায় পার্শ্ববর্তী কুমারখালী গ্রামে তার এক বোনের বাড়িতে নিয়ে রেখে দেয়। এ বিষয়টি তিনি যাতে কাউকে না জানাতে পারেন। সেজন্য বৃহষ্পতিবার রাত থেকেই ওই যুবকরা তাকে নজরবন্দি করে রাখে।
জানা যায়, মঙ্গলবার তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার নাজমুল কবীর ঝিলাম ঘটনাটি লোকমুখে জানতে পেরে তার লোক পাঠিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, রামপালের এক জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ওই নারীকে পালক্রমে ধর্ষণের পর আটকে রাখে। ঘটনা জানার পরও ওই নেতার ভয়ে এতোদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তালুকদার নাজমুল কবীর ঝিলাম বলেন, “ডাকরা গ্রামের কতিপয় যুবক আমার ইউনিয়নের স্বামীহারা এক নারীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সংবাদ জানতে পেরে আমার লোকজন সেখানে যায়। আমার লোকজনের উপস্থিতি টের ওই যুবকরা পালিয়ে গেলে তাঁকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।”
রামপাল থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ধর্ষণের শিকার ওই বিধবা নারীকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চার যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম