News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১৮ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১০:৩২, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

‘স্নানে পাপ মোচন হয়, তাই স্নান করতে এসেছি’

‘স্নানে পাপ মোচন হয়, তাই স্নান করতে এসেছি’

পঞ্চগড়: দীর্ঘদিন ধরে এখানে স্নান করা হচ্ছে। স্নান করলে দেহ-মনে পাপ মোচন হয়। তাই স্নান করতে এসেছি। নিউজবাংলাদেশকে একথা জানিয়েছেন পঞ্চগড় জেলার দেবীধস উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের বৃদ্ধা কুশলা রানি।

উল্লেখ্য, আজ থেকে বোদা উপজেলায় শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবল্বীদের তিন দিনব্যাপী বারুণী স্নান। দেহ-মন থেকে পাপ মোচন ও পুণ্যের জন্য কুশলার মতো হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী করতোয়া নদীর উত্তরমুখী ঊর্মিমালায় এ বারুনি স্নান করে থাকেন।

প্রতিবছর বোয়ালমারী বারুনি গঙ্গা মন্দির কমিটির উদ্যোগে এ স্নান অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি ধনিরাম চন্দ্র নিউজবাংলাদেশকে জানান, পঞ্চগড়সহ আশপাশের পুণ্যার্থী ও সাধু-সন্ন্যাসী করতোয়া নদীর উত্তরমূখী ঊর্মিমালায় পুণ্যস্নান করে।

তিনি আরো জানান, করতোয়া নদীর বোয়ালমারি স্থানটি প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত উত্তরদিকে প্রবাহিত হয়। যে স্থানে নদীর প্রবাহ সোজা উত্তরমুখী সে স্থানে স্নান করা পুণ্যের কাজ। নদীর উত্তরমুখী ঊর্মিমালায় স্নান করলে দেহ-মন থেকে পাপ ধুয়ে যায়। আর এ কারণে হিন্দু নর-নারীরা এখানে এসে স্নান করেন।

মন্দিরের পূজারি হরিপদ চক্রবর্তী নিউজবাংলাদেশ বলেন, প্রতি বছর এ সময় এখানে পুণ্যস্নান হয়। সব তীর্থস্থানই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে সাধনার ধন। পূজা-পার্বণে কোশার জলে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতি, সিন্ধু, গোদাবরী নদ-নদীকে সম্মোহিত হতে বলা হয়।

তিনি জানান, পূজায় ঘট স্থাপনকালে মন্ত্রে উচ্চারিত হয় স্বর্গে, মর্ত্যে ও পাতালে গঙ্গাসহ সব নদ-নদী, সরোবর, প্রস্রবণ ও যেখানে যে তীর্থ আছে সবই এঘটে সন্নিহিত হোক। মৃত্যুর পরে যে স্নান কার্য সেখানেও একই মন্ত্র উচ্চারিত হয়।

আজ সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, করতোয়া নদীর দুই পাড়ে বসেছে শত শত পূজারি ও নরসুন্দর। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পবিত্র হওয়ার জন্য মাথার চুল বিসর্জন দেন। জীবনে-মরণে স্নান হিন্দুদের এক অখন্ড মহামন্ত্র। স্নানের পবিত্র ধারায় দেহ- মনকে ধন্য করার এক আত্মিক সাধনা।

বারুনি মেলার করতোয়া নদীর স্নানও সেই ঐক্যেরই এক সম্মিলিত আরাধনা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সংকল্প, বাক্য ও স্নানমন্ত্র পাঠ করে হাতে বেলপাতা, ফুল, ধান, দুর্বা, হরিতকি, কাঁচা আম, ডাব ইত্যাদি অর্পণের মাধ্যমে স্নান সম্পন্ন করেন।

বারুনি গঙ্গা মন্দির কমিটি আরো জানায়, উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার ভক্ত এখানে স্নান করতে আসে। আমরা প্রতিবছর এখানে ৩ দিনব্যাপী স্নানের আয়োজন করে থাকি। নদীর ওপর অস্থায়ী সাকো নির্মাণ করে নদীর এপার-ওপার পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, এ স্নান উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য পাওয়া যায়।

দেখা গেছে, স্নান উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছে বারুনি মেলা। এখানে প্রায় ছোট-বড় দুই হাজারেরও বেশি দোকানপাট বসেছে। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত নানা সামগ্রী পাওয়া যায় এ মেলায়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়