গাইবান্ধায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, জনজীবন বিপর্যস্ত
ছবি: নিউজবাংলাদেশ
দেশের উত্তরের নদ-নদী বেষ্টিত জেলা গাইবান্ধায় চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় গাইবান্ধা জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ২৪ ঘণ্টা আগেও জেলার তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গাইবান্ধা জেলায় এভাবেই প্রতিদিন নেমে আসছে তাপমাত্রার পারদ। এতে জেঁকে বসেছে শীত। কনকনে হাওয়ার দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। কয়েকদিন থেকে কুয়াশার কারণে রোদের দেখা নেই। প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের বাসিন্দারা। ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলতে দেখা গেছে।
শীত নিবারণের জন্য মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষগুলো শীতবস্ত্র সংগ্রহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ক্লিনিকগুলোতে শীতজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগীরা বেশি আসছেন। এদের মধ্যে মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বর ও অ্যাজমায় আক্রন্তের সংখ্যা বেশি।
অপরদিকে হিমেল হাওয়া ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়ছেন খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকরা। গবাদিপশুগুলোর গায়ে পুরনো কাঁথা, কম্বল, বস্তা, পুরনো জামা-কাপড় জড়িয়ে দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তবে সব থেকে বেশি সমস্যায় রয়েছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত চরাঞ্চলের গবাদিপশুগুলো।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দা গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, শীতে অবস্থা খুব কাহিল। এরকম ঠাণ্ডা ও শীত হলে আমার মতো বয়স্ক মানুষগুলোর খুব সমস্যা। এমনিতেই অসুখে চলতে পারি না। এখন শুধু হাত-পা টাটায়।
হরিপুর ইউনিয়নের চরিতাবাড়ী গ্রামের আরিফ হোসেন বলেন, তিনদিন থেকে খুব ঠান্ডা ও কুয়াশা। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। আমাদের চরে তো সবসময় বাতাস থাকে তাই খুব ঠান্ডা। বাড়ি থেকে বাহির হওয়া যাচ্ছে না। গতকালও সারাদিন কুয়াশায় ঢাকা ছিল আমাদের এলাকা। আজ কুয়াশা আরও বেশি।
কৃষক ছলিম উদ্দিন বলেন, প্রচণ্ড শীত সেই সাথে ঠাণ্ডা বাতাসে গরু-ছাগল নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে শীতের হাত থেকে বাঁচতে গরুর গায়ে চট দিয়েছি।
বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, এই শীতে মানুষের যেমন কষ্ট হয় তার থেকে বেশি কষ্ট হয়েছে গরু বাছুরের। আমরা তো ঠাণ্ডা লাগলে বলতে পারি কিন্তু ওরা তো বলতে পারে না। তাই ছালা-চট তাদের গায়ে দিয়েছি।
রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, প্রতিদিনই গাইবান্ধা জেলার তাপমাত্রা কমে আসছে। আজ চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আগামীতে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি