উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, মামলার নির্দেশ
উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: নিউজবাংলাদেশ
উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও বদলি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানার ওসিকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম-কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বেনাপোল পরিদর্শনে আসেন।
এ সময় ভুক্তভোগীরা উপদেষ্টার নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে উপদেষ্টাকে জানালে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম-কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের নাম ভাঙিয়ে নানা অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমাকে থানায় মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে কোন একজন বাদী হলেই থানায় মামলা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এর আগে, বেলা ১২টায় বেনাপোল বাজারে চোরাকারবারী টাক কামালের বিরুদ্ধে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। এ সময় মানববন্ধনে কয়েক হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে বক্তারা টাক কামালের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলে স্লোগান দেন।
বক্তারা বলেন, টাক কামাল বেনাপোল দিঘীরপাড় এলাকার চোরাকারবারী খোকনের ছেলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা কামাল ২০১০ সালে বেনাপোল পুরাতন পৌর ভবনের ডান পাশে বিজিবি ক্যাম্পের কোনায় ফুটপাতে বসে মোবাইল ফোনের ফ্লেক্সিলোড ও সিম বিক্রয় করত। এরপর বিজিবি ক্যাম্পের অপজিটের সাদিপুরের মতিয়ারের বিল্ডিং এর নিচে থাকা কন্টিনেন্টালের ম্যানেজার মামুনকে কৌশলে তাড়িয়ে কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিস দখল করে নেয়।
এরপর থেকে সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ভারতীয় চোরাই পণ্য ও বন্দরের চোরাই মালামাল ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাচার করতে থাকে। আওয়ামী লীগের আমলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবৈধ অস্ত্রও পাচার করে।
তাছাড়া একটি সংঘবদ্ধ হিজড়া চক্রের মূল হোতা এ টাক কামাল। সে হিজড়াদের মাধ্যমে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকার অবৈধ মালামাল দেশের ভিতর প্রবেশ করায়। বেনাপোলে রয়েছে তার একটা শক্তিশালী স্মাগলিং চক্র।
তৎকালীন যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মতিউর রহমানের কাছে কয়েকবার আটকও হয়। কিন্তু বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে মুচলেকা দিয়ে সে ছাড়া পেয়ে যায়। এসব অনৈতিক কাজ করে সে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যায়।
এরপর অবৈধ টাকার বৈধ করতে সে সাংবাদিক হতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লগ্নী করে মোটা অংকের টাকা। হাতিয়ে নেয় কয়েকটা প্রতিষ্ঠানের কার্ড। সাদা পাঞ্জাবি, সাদা পায়জামাও টুপি মাথায় দিয়ে সে এলাকায় শুরু করে আরেক অপরাধ জগত।
বর্তমানে সে বেসরকারি একটা টেলিভিশনের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে বন্দরের পরিচালক, সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে মোট অংকের চাঁদা দাবি করে। না হলে তাকে বদলি করা হবে। এমন হুমকি ধামকিও প্রদান করে। শুধু বন্দর পরিচালক বা বন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তাই নয়। ইমিগ্রেশনে ও বন্দরের বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও মাদক ব্যবসায়ীদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন তারা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি