বঙ্গবাজারে অগ্নিসংযোগের দায়ে তাপসসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বঙ্গবাজারে অগ্নিসংযোগের দায়ে তাপসসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা। ছবি: সংগৃহীত
প্রায় দেড় বছর আগে রাজধানীর বঙ্গবাজারে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে মিরপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন রিপন বাদী হয়ে ৫০০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে মামলাটি করেন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর।
খালিদ মনসুর বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান, জহিরুল ইসলাম, মোহন ঢালী, মনোয়ার হোসেন মনু, লোকমান খান, বেলায়েত হোসেন, রুবেল, হুমায়ুন কবির, শাহাবুদ্দিন, আব্দুল হান্নান, হাসানসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
মামলায় বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বঙ্গবাজারে আগুন দিয়ে দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভোররাতে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা পরস্পরের যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভোর ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। উদ্ধারকাজ ও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীও। সবার চেষ্টায় প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে ৭৫ ঘণ্টা পর অর্থাৎ ৭ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে পুরোপুরি আগুন নেভে। ওই সময় বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় আনুমানিক দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। এ ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটি ও ফায়ার সার্ভিস গঠিত তদন্ত কমিটি তখন বলেছিল, মশার কয়েলের আগুন বা বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল।
বঙ্গবাজারে আগুন লাগার ঘটনায় ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। তারা বলেছিল, মার্কেটের তৃতীয় তলায় একটি টেইলার্স থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সিগারেটের অথবা মশার কয়েলের আগুন থেকে এই ঘটনা ঘটে। এতে ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী সর্বস্ব হারান এবং ৩০৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে সিটি করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়।
তবে দোকান মালিক নেতাদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি