সাভারে ফুল ছেড়ায় পেটানো হলো দুই শিশুকে
ঢাকার অদূরে সাভারে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বাগানের ফুল ছেড়ার অভিযোগে দুই শিশুকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
মারধরের বিচার চাইতে গিয়েও প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শহীদুল মন্ডলের নানান লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে অভিভাবকদের। ঘটনার পর থেকেই নিজের মুঠোফোন বন্ধ রেখে রীতিমত গাঢাকা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অভিযুক্ত মারধরকারী শিক্ষক মেহেদী হাসান।
শুক্রবার বিকেল ৬টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পুকুরপাড় এলাকায় শহীদুল মণ্ডলের মালিকানাধীন সুরুজ্জামান কিন্ডার গার্টেন স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিশু মো. সিয়াম বাবু লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ থানার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সিয়াম শিমুলিয়ার পুকুড়পাড় এলাকার কপিল মিয়ার বাড়িতে বাসা ভাড়ায় পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছে। ভুক্তভোগী মো. সালমান (১২) নামে অপর শিশুটি সিয়ামের প্রতিবেশী।
শিশু সিয়ামের বাবা কাঁচামালের দোকানি সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “৬টা বাজার একটু আগে স্কুলের পাশের ওরা খেলছিল। স্কুলের ভিতরে অনেক পোলাপানই খেলেছিল। এখন ওই পোলাপানের মাধ্যমে কে না কি ফুল ছিড়ছে? এখন ফুল ছেড়ার কারণে ওই মাস্টর ধমক মেরেছে। এরপর স্কুলের ভেতরে যে পোলাপানগুলো ছিল এরা সবাই পালিয়েছে। পরে বাইরে এদের দুইজনকে পেয়ে বলে, এই তোমরা এত খেলাধুলা কর কেন? এই ভেতরের ফুল ছিড়ছে কে? এসব বলেই মারধর শুরু করেছে। মারপিটে গাল, পিঠ ফুলে গেছে।”
তিনি জানান, দুই শিশু বলেছে, “আমরা আসলে ছিড়ি নাই। আমরা এখানে খেলতেছি। ভুল হয়্যা গেছে স্যার আর খেলবো না।”
ভুল স্বীকার করার পরও মারধর করা হয়। থাপ্পর দিতে দিতে বাইরে থেকে স্কুলের ভিতরে নিয়ে গেছে। পরে লাঠির মতো বেত দিয়ে বেধরক পেটানো হয়। এতে পিঠ ফুলে গেছে। বিষয়টা অনেক লোকজন দেখেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও ‘এখানে বাচ্চারা খেলবে কেন? ওদের বাড়ি কোথায়’ এমন কথা বলে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে পাশের ওষুধের দোকানে নিয়ে চিকিৎসাটা করানো হয় শিশুদের।
থানায় অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, “৯৯৯ এ ফোন দিছিলাম। সেখান থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ১০৯ এ ফোন দিতে বলছে। পরে ব্যস্ততার কারণে ওখানে একটা অভিযোগ করেছি একটা এসএমএস দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ ফোন দেয় নাই।”
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল মন্ডলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “বিষয়টা আমার জানা নেই। আমি একটু বাইরে আছি। তারপরও কাউকে (ভুক্তভোগী) একটু থানায় পাঠান। আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ