News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ২৩ জুন ২০২০
আপডেট: ১৫:৩৩, ২৩ জুন ২০২০

বাঘকে শায়েস্তা না করে মাছি মেরে দুর্নীতি বন্ধ হবে না: এম এম আকাশ

বাঘকে শায়েস্তা না করে মাছি মেরে দুর্নীতি বন্ধ হবে না: এম এম আকাশ

বাঘকে শায়েস্তা না করে মাছি দুই-একটা মেরে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। একই সঙ্গে বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস প্রার্দুভাবের সময়ে বাঘের দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

মঙ্গলবার গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত করোনাকালে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা ও বাজেট ২০২০-২১ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় তিনি এসব কথা করেন।

গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কর্মরত নাগরিক সমাজের সংগঠন ও নেটওয়ার্ক, স্থানীয় সরকার প্লাটফর্ম, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট প্র্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট। ফোরামের চেয়ারপারসন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফোরামের সমন্বয়কারী ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।

এম এম আকাশ বলেন, আমরা দুর্নীতি দুর্নীতি বলে স্থানীয় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছি। করোনাভাইরাসের স্থানীয় সরকারের ৭০ হাজার লোকের মধ্যে ১০০ জনের দুর্নীতি প্রমাণ হয়েছে। দুর্নীতি দূর করার জন্য অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় দুর্নীতি দুই রকম। বাঘের দুর্নীতি আর মাছির দুর্নীতি। মাছিকে শায়েস্তা করে বাঘকে শায়েস্তা করা যায় না। বাঘকে শায়েস্তা করার জন্য পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট দরকার। রাষ্ট্রের চরিত্র ওই বাঘের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি এমন নীতি দরকার। এখানে বাঘের দুর্নীতি যে করোনাকালে হয়েছে তা দুই ব্যাংকের (এক্সিম ও ও ন্যাশনাল ব্যাংক) গোলাগুলিতে প্রমাণ হয়। অর্থাৎ বাঘকে শায়েস্তা না করে মাছি দুই-একটা মেরে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না।

আরও বলেন, এ বাজেটে যে প্রস্তাবনা তা শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকবে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তাই একটি অন্তর্বর্তী বা দুর্যোগকালীন বিশেষ বাজেট করতে পারতো সরকার। করোনার কারণে যে বিশেষ বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা ফোকাস করা দরকার ছিল। সহায়তার জন্য নতুন দরিদ্র মানুষের তালিকা সঠিকভাবে করতে হবে, সেখানে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বের বিকল্প নেই। শুধু আমলাতন্ত্র দিয়ে এটা সম্ভব নয়, সরকারকে এটা বুঝতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা বজায় রেখে সরকারি সহায়তাগুলো তদারকির দায়িত্ব দিতে।

অনুষ্ঠানে আলোচনাপত্র উপস্থাপনকালে মহসিন আলী সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন।

এই দাবিগুলো হলো- করোনা মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রকৃত উন্নয়ন বরাদ্দ ১.৭ শতাংশ থেকে অন্তত ৪ শতাংশে উন্নীত করা; আগামী অর্থবছরের মধ্যে স্থানীয় সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও সামাজিক প্রতিনিধিদের সম্মিলিত উদ্যোগে সকল অতিদরিদ্র, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সঠিক তালিকা নিশ্চিত করা; করোনা প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা ও সরকারি ত্রাণ কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি দল-মত নির্বিশেষে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ; বিকেন্দ্রীকরণ নীতির আলোকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করা এবং জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করার জন্য চলমান আইনসমূহের পর্যালোচনা ও পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা; করোনা সংকট উত্তরণে সরকারের গৃহীত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়ন ও তদারকির ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান ও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো খাতে দুর্নীতি হলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/এএস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়