১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা
ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আম্পান। এটি বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলে ১০ থেকে ১৫ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস।
বুধবার সকালে আবহাওয়ার সবশেষ ৩১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ উত্তর-উত্তরপূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় (১৯.৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৪ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি বুধবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বিকাল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
সতর্ক সংকেত: মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় জনিত জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা: ঘূর্ণিঝড় এবং দ্বিতীয় পক্ষের চাঁদের সময়ের শেষদিনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০-১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতা: ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
জেলেদের জন্য সতর্কতা: উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ