এক সপ্তাহে শনাক্ত সাড়ে ৪ হাজার
দিন যত যাচ্ছে, নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণও ততই বাড়ছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এসে এই সংক্রমণের পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে আগের সব রেকর্ড। এই এক সপ্তাহে চার হাজার ৭৫৮ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এই এক সপ্তাহেই শনাক্তের সংখ্যা মোট আক্রান্তের ৩৮ শতাংশেরও বেশি।
আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়লেও এই সপ্তাহে এসে কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এই সপ্তাহে মোট ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিলের শেষ দুই সপ্তাহের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক কম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৭০৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কম হলেও এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো একদিনে সাত শতাধিক সংক্রমণ শনাক্ত হলো। এর মধ্যে আগের দিনের ৭৯০ জনের শনাক্ত হওয়া এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের প্রথম সাত দিনে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে যথাক্রমে ৫৭১, ৫৫২, ৬৬৫, ৬৮৮, ৭৮৬, ৭৯০ ও ৭০৬ জনের শরীরে। লক্ষ্যণীয় বিষয়, এই সাত দিনের মধ্যে পাঁচ দিনই সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পরিমাণ আগের দিনের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ দিন যত যাচ্ছে, সংক্রমণের পরিমাণও ততই বাড়ছে।
সব মিলিয়ে এক সপ্তাহে মোট সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৭৫৮ জনের শরীরে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে কোনো সপ্তাহেই এত বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মূলত করোনা সংক্রমণ গতি পেয়েছে। সেই তৃতীয় সপ্তাহে (১৫ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ৩৭০টি। চতুর্থ সপ্তাহে (২২ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল) তা বেড়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ৮০টিতে। তবে এপ্রিলের শেষ সাত দিন (২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল) বিবেচনায় নিলে সংক্রমণের পরিমাণ ছিল আরও বেশি। এই সাত দিনে তিন হাজার ৪৮১ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
এই হিসাবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এর চেয়েও এক হাজার ২৭৭টি সংক্রমণ বেশি শনাক্ত হয়েছে। এপ্রিলের শেষ সাত দিনের তুলনায় এই সংখ্যা ৩৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।
মে মাসের প্রথম এই এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষাও অবশ্য বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এই সাত দিনে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪০ হাজার ৯০৭টি। এর আগে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ১৬ হাজার ৪৫০টি ও চতুর্থ সপ্তাহে ২৪ হাজার ৫৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আর এপ্রিলের শেষ সাত দিনে এর পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ৯৫৬টি। অর্থাৎ এর তুলনায় ১২ হাজার ৯৫১টি নমুনা মে মাসের প্রথম সাত দিনে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি।
মে মাসের প্রথম এই সপ্তাহে কেবল কমেছে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মৃত্যুর পরিামণ। এই সপ্তাহের প্রথম ছয় দিনে মারা গিয়েছিলেন ১৮ জন। শেষ দিনে এসে ১৩ জন মারা গেছেন। সবমিলিয়ে ৩১ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন এই সপ্তাহে।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহের পর থেকেই অবশ্য এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হার কমতির দিকে। ওই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ৬৪ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা যাওয়ার পর চতুর্থ সপ্তাহে মারা গিয়েছিলেন ৪৫ জন। আর এপ্রিলের শেষ সাত দিনে মারা যান ৪১ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়লেও মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এসে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে আরও ১০টি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ