নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা কমেছে বিআইটিআইডির
হঠাৎ করেই নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের নমুনা পরীক্ষা কমেছে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি)। চারদিন দিন ধরে এ প্রতিষ্ঠানটিতে গড়ে ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। অন্তত পাঁচদিন আগেও প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫০টির বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হতো।
অন্যদিকে পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা পড়েছে এক হাজারের বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক মাস ধরে টানা কাজ করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বাইরে প্রথম চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডিতে ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তকরণ পরীক্ষা। এ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন। বিআইটিআইডির কাছে এ ধরনের মেশিন আছে মাত্র একটি।
বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২৫০টির বেশি নমুনা আসছে। তার মধ্যে চারদিন ধরে পরীক্ষা হচ্ছে গড়ে ১০০টির মতো। পরীক্ষা কম হওয়ায় নমুনার স্তূপ জমে যাচ্ছে। এমনকি পাঁচ-ছয়দিন আগের নমুনার পরীক্ষাও করা হচ্ছে এখানে। সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ২০০ নমুনা পরীক্ষার জন্য আটকে আছে।
বিআইটিআইডি থেকে প্রাপ্ত গত আটদিনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল এ প্রতিষ্ঠানে ১১৩টি, ২৮ এপ্রিল ১০০, ২৭ এপ্রিল ১০০, ২৬ এপ্রিল ১০১, ২৫ এপ্রিল ১৮৯, ২৪ এপ্রিল ১৮৩, ২৩ এপ্রিল ১৮৪ ও ২২ এপ্রিল ১৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত তিন হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে চট্টগ্রামের আছে প্রায় এক হাজার।
এ বিষয়ে বিআইটিআইডির ল্যাবপ্রধান ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, “লোকবল সংকট এবং দুটি পিসিআর নিয়ে আমরা কাজ করছি। টানা কাজ করার জন্য সহকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। জরুরি ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানে লোকবল বাড়ানো এবং পিসিআরসহ অনান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।”
এদিকে বিআইটিআইডির পরীক্ষার গতি বাড়াতে চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসুতে) নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা চালু করা হয় গত শনিবার থেকে। তবে গত বুধবার পর্যন্ত সিভাসুতে পাঁচদিনে ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৫ জনের।
সিভাসুর করোনা ল্যাব ইনচার্জ অধ্যাপক ড. জুনায়েদ সিদ্দিকী বলেন, “লোকবল ও যন্ত্রপাতি সংকট থাকার পরও আমাদের এখানে ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা করেছি। যন্ত্রপাতির বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। আমরা সীমিত লোকবল দিয়ে রোটিশন করে কাজ করছি।”
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, “বিআইটিআইডিতে হঠাৎ করেই কয়েক দিন পরীক্ষা কমে গেছে। সবাইকে টানা কাজ করার কারণে সমস্যা হচ্ছে। শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নমুনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সিভাসুতে আরো কাজের গতি বাড়াতে আমরা তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করছি তিন প্রতিষ্ঠান মিলে একত্রে কাজ শুরু হলে নমুনা জটের সমস্যা সমাধান হবে। তাছাড়া বিআইটিআইডির কাজের গতি বাড়ানোর জন্য আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ