স্যার ফজলে হাসান আবেদের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী সোমবার
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী সোমবার।
গতবছর ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুর আগে ব্র্যাককে স্যার ফজলে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থার মর্যাদায়; শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য মুক্তির বিভিন্ন কর্মসূচির অবদানে সম্মানিত হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে।
দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের নাইট উপাধিতে ভূষিত হন ফজলে হাসান আবেদ।
ওই উপাধি দেওয়ার ঘোষণায় ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, “বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবাধিকার ও সামাজিক উন্নয়নে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্যে গত চার দশক ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ায় আবেদকে এই সম্মান প্রদান করা হচ্ছে।”
১৯৫২ সালে পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন আবেদ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় অনার্সে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে না পড়ে তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান।
তখন তার ছোট চাচা সায়ীদুল হাসান ছিলেন লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসের বাণিজ্য সচিব। তিনি আবেদকে স্কটল্যান্ডে গিয়ে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হতে বলেন।
১৯৫৪ সালে আবেদ স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেভাল আর্কিটেকচারে ভর্তি হন। কিন্তু দুই বছর লেখাপড়া করার পরে লন্ডনে গিয়ে ভর্তি হন অ্যাকাউন্টিংয়ে।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে লেখাপড়া করার সময়েই ১৯৫৮ সালে তার মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুনের মৃত্যু হয়। ১৯৬২ সালে ‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং’-এর ওপর তিনি প্রফেশনাল কোর্স করেন।
১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল তৎকালীন সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার বানিয়াচংয়ে জন্মগ্রহণ করেন কর্মগুণে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এই বাংলাদেশি।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে কয়েক দশকের ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৯ সালে ফজলে হাসান আবেদ নেদারল্যান্ডসের নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অব অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত হন।
দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানজনক নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত হন তিনি।
২০১৯ সালে শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে অত্যন্ত মর্যাদাসূচক এবং অর্থমূল্যের দিক থেকে সবচেয়ে বড় পুরস্কার ইদান প্রাইজ পান ফজলে হাসান আবেদ। হংকংভিত্তিক ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন ওই পুরস্কার দেয়। ২০১৮ সালে তিনি পান ডেনমার্কের লেগো ফাউন্ডেশনের পুরস্কার।
এছাড়া জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের টমাস ফ্রান্সিস জুনিয়র মেডেল অব গ্লোবাল পাবলিক হেলথ পুরস্কার, খাদ্য ও কৃষিক্ষেত্রে অবদানের জন্য ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ, রাশিয়ান চিলড্রেন ফান্ড থেকে লেভ তলস্তয় স্বর্ণপদক এবং স্পেনের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা অর্ডার অব সিভিল মেরিট, কাতার ফাউন্ডেশন প্রবর্তিত শিক্ষাক্ষেত্রে সম্মানজনক পুরস্কার ওয়াইজ প্রাইজ, ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড, গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ, ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন বিষয়ক পুরস্কার মাহবুবুল হক অ্যাওয়ার্ড, ইউনেস্কোর নোমা পুরস্কার এবং র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য সম্মাননায় তিনি ভূষিত হয়েছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি