টাঙ্গাইলে মসজিদের মাইকে ডাকাত গুজব
আতঙ্কিত এলাকাবাসীর গাড়ি ভাংচুর
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ও গতকাল বুধবার রাতে বিভিন্ন এলাকায় মসজিদে মসজিদে মাইকে গুজব ছড়িয়ে ডাকাত আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় ডাকাত সন্দেহে যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের মারপিট ও যানবাহন ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চুরি বা ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। দুর্যোগের সময় গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করার হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস দুর্যোগের সময় আতংক সৃষ্টি করার জন্য একটি চক্র গুজব ছড়িয়েছে, চুরি বা ডাকাতির মত কোন ঘটনা ঘটেনি বলে মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সায়েদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্ত কওে তাদেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার রাত সাওে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত হঠাৎ করেই বিভিন্ন এলাকার মসজিদে মসজিদে ঘোষণা আসছে কালিয়াকৈরের শফিপুর, চন্দ্রা, সুত্রাপুর, বোর্ডঘর, গোড়াই, আজগানা, সোহাগপাড়া, বাঁশতৈল, পাথরঘাটা, মির্জাপুর বাজার, ওয়ার্শি, বানাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাত হামলা করেছে। আপনারা সাবধান হন। ডাক্তারদের পিপিই পরে এবং পুলিশের পোষাক পরে ডাকাত দলের সদস্যরা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা করছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আতঙ্কিত লোকজন গণমাধ্যম কর্মী, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে ফোনে ঘটনা জানাতে থাকেন। অনেকে ফেসবুকে ডাকাত আতঙ্কের খবরটিও ভাইরাল করে দেন। ফলে ডাকাত আতঙ্গে গত দুই দিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটছে মির্জাপুরবাসীর।
এদিকে বুধবার ভোর রাতে সখীপুর থেকে একটি প্রাইভেটকার কালিয়াকৈর যাওয়ার পথে আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা এলাকায় কিছু লোকজন প্রাইভেটকারটি ভাঙচুর করে এবং চালককে মারপিট করে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাইভেটকারটি উদ্ধার করে মির্জাপুর থানা পুলিশের হেফাজতে এনেছেন। একইভাবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর পুষ্টকামুরী চরপাড়া এরাকায় ২/৩ জন শ্রমিক হেঁটে যাওয়ার সময় তাদরে ডাকাত সন্দেহ করে হামলার চেষ্টা করা হয়। পরে চেকপোষ্টের পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
পৌরসভা, উপজেলার মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের কয়েকজন চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোথাও কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলী এজাজ খান চৌধুরী রুবেল বলেন, এই দুর্যোগের সময় একটি চক্র ডাকাত আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য এই গুজব ছড়িয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মির্জাপুর সার্কেল) দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে রাতে এ ধরনের খবর তাদের কাছেও এসেছিল। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সায়েদুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. যুবায়ের হোসেন বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস