News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ২১ এপ্রিল ২০২০
আপডেট: ০৪:২৮, ২৪ এপ্রিল ২০২০

স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাওরে ধান কাটতে যাচ্ছেন কৃষকেরা: কৃষিমন্ত্রী

স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাওরে ধান কাটতে যাচ্ছেন কৃষকেরা: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাওরে ধান কাটতে যাচ্ছেন কৃষকেরা। ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের ধান কাটায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন এবং খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের হাওরে বোরো ধান কাটা পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তার এ পরিদর্শনের সময় সংশ্লিষ্ট চাষি ও শ্রমিক ছাড়া কোনো রাজনৈতিক কর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা জনগণ কেউ উপস্থিত ছিলেন না। করোনা থেকে নিরাপদে থাকতে সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। কৃষিমন্ত্রী কৃষকদের মধ্যে সাবান, গামছা ও লুঙ্গি বিতরণ করেন।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনুরোধে শ্রমিকগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধান কাটতে এসেছেন। আমরা তাদের উৎসাহিত করতে এবং তাঁদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে এসেছি। সরকার সব সময় তাঁদের পাশে রয়েছে। কেউ অসুস্থ বা করোনাআক্রান্ত হলে সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতা করা করা হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে এ বছর বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। এ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২০ ভাগের জোগান দেয় হাওরাঞ্চলের বোরো ধান। হাওরে বছরে শুধু একটি ফসল হয়, সেটি হলো বোরো ধান। এই ফসল ফলাতে হাওরের কৃষকেরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে এবং সার, সেচ, বালাইনাশকসহ প্রভৃতিতে তাঁরা সর্বস্ব বিনিয়োগ করে। এ ফসল যদি নষ্ট হয়, সময়মতো ঘরে না তোলা যায়, তাহলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি, সারা দেশে খাদ্যের সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাওরের ফসল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তোলা জরুরি। আর এটি করতে পারলে বাংলাদেশের ধান উৎপাদনে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একই সঙ্গে, নিশ্চিত করবে খাদ্যনিরাপত্তা । কৃষি মন্ত্রণালয় এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রণোদনাসহ নানা উদ্যগোর কথা তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জেলা/উপজেলা/ইউনিয়ন কৃষি বিভাগকে সম্পৃক্ত করে আমরা হাওরে আসার জন্য শ্রমিকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছি। গমনেচ্ছুক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রত্যয়নপত্র প্রদান, নিরাপদ যাতায়াতের জন্য গাড়ি, নির্বিঘ্ন গমনাগমন এবং ধানকাটা স্থলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে থাকার ব্যবস্থা প্রভৃতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাওরাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এই সাত জেলায় এ বছর শুধু হাওরে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার পর্যন্ত হাওরের ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। নেত্রকোনা জেলার হাওরে ৪০ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। ধান কাটার জন্য ৬২টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ও ২৫টি রিপার ব্যবহৃত হচ্ছে। ১১ হাজার ৪৫০ জন শ্র্রমিক ধান কাটার কাজ করছেন। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৩১ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।

এ সময় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, স্থানীয় সাংসদ অসীম কুমার উকিল, স্থানীয় সাংসদ মানু মজুমদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.আব্দুল মুঈদ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক নিখিল চন্দ্র সেন, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়