News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ট্যানারিসহ ৬ খাত থাকবে ‘শিশুশ্রম মুক্ত’

ট্যানারিসহ ৬ খাত থাকবে ‘শিশুশ্রম মুক্ত’

দেশের রেশম, ট্যানারি, সিরামিক, গ্লাস, জাহাজ প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রপ্তানিমুখী চামড়াজাত দ্রব্য ও পাদুকা শিল্পকে ‘শিশুশ্রম মুক্ত’ ঘোষণা করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রম ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কেরানীগঞ্জে গেঞ্জি সেক্টরে এখনও শিশুদের বড় একটি অংশ কাজ করছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকা জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলব। কেরানীগঞ্জে শিশুশ্রম বন্ধ করতেই হবে।”

শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে নয়টি কৌশলগত ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গত বছরের অক্টোবরে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার।

প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান জানান, গত ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদের সপ্তম সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সুপারিশ বিবেচনা করে বিভিন্ন খাতকে সময় সময় শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করার সুপারিশ আসে। পরে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে ‘জাতীয় মনিটরিং কোর কমিটি’ গঠন করা হয়।

ট্যানারি, গ্লাস, সিরামিক, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানিমুখী চামড়াজাত দ্রব্য ও পাদুকা এবং রেশম- এই ছয়টি শিল্প খাতের মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব খাতে কোনো শিশু শ্রমিক নেই।

সংশ্লিষ্ট খাতের সমিতি থেকে প্রত্যয়ন পাওয়ার পর জাতীয় মনিটরিং কোর কমিটি গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এ ছয় খাতের বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করে। তার আগেই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শকরা কারখানা পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়। আর জাতীয় মনিটরিং কোর কমিটি ছয়টি খাত পরিদর্শন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ছয়টি প্রতিবেদন দাখিল করে।

মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, “কোর কমিটি জানিয়েছে, তাদের পরিদর্শনের সময় এই ছয়টি সেক্টরের কারখানার মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের কারখানায় কখনও শিশু শ্রমিক নেওয়া হবে না। কোর কমিটিও তাদের পরিদর্শনে কোনো শিশু শ্রমিক সেখানে দেখতে পাননি। তাই আমি এই ছয়টি সেক্টরকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করছি।”

বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচে কাউকে কারখানায় শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করা যাবে না, তবে ১৪ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ নয়, এমন হালকা কাজ করতে পারবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ১২ লাখ ৮০ হাজার।

শ্রম বাজার থেকে শিশুদের মুক্ত করে শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় এনে শিশুদের সঠিক বিকাশ নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০১০ সালে শিশুশ্রম নীতি প্রণয়ন করে। ২০১২ সালে শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এছাড়া ২০১৩ সালে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা প্রকাশ করে।

পরে শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চার স্তরবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও শিশু শ্রম নিরসন সংক্রান্ত প্রকল্প নেয়।

মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, “সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শিশুশ্রম মুক্ত বলে আশা করছি।”

অন্যদের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়