শ্রমিকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্যাতিত হচ্ছে
আদমজী ইপিজেড এএমএস টেক্সটাইল ও সানিয়া ফাইন নিট লিমিটেড অবিলম্বে খুলে দিয়ে কাজের পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন ওই কারখানা দুটির শ্রমিকরা।
শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের যৌথ উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিক নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধর বলে দাবি করে। কিন্তু তাদের কাজকর্মেও তা প্রকাশ পাচ্ছে না। মালিকরা শ্রমিকদের ওপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছেন। কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ জানতে চাইলে পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে।
রাষ্ট্র ও প্রশাসন শ্রমিকবান্ধব নয়, মালিকবান্ধব হয়ে ওঠেছে। প্রশাসনের ইন্ধনেই মালিক কারখানারা বন্ধ করতে সাহস পেয়েছে বলে জানায় শ্রমিক নেতারা।
শ্রমিকদের ওপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না বলে হুশিয়ারী দেন শ্রমিক নেতারা।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিকফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরকার গর্ব করে বলেছেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে ২৩ বিলিয়ন ডলার। আগামী ৭ মাস দেশে যা আমদানী করা দরকার তার টাকা মজুদ আছে। এই টাকা হচ্ছে শ্রমিকদের শ্রমে অর্জিত ও দেশের বাইরের ৮৭ লাখ শ্রমিকদের পাঠানো টাকা।
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সরকার তো গর্ব করে বললেন- ৭ মাসের আনদানী করার জন্য পর্যাপ্ত টাকা জমানো আছে। শ্রমিকদের শ্রমের বিনিময় দেশের আমদানী করার জন্য অর্থের রিজার্ভ বাড়ছে। কিন্তু শ্রমিকদের সংসার চলছে না এটা কেমন নীতি?
আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইন নাকি সবার কাছে সমান। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আইন মালিক ও শ্রমিকের জন্য আলাদা, কেন? এই বৈষম্যের কারণে শ্রমিকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্যাতিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা কখনো মিথ্যা কথা বলে না। কিন্তু মালিকরা ব্যাংকের সুদ দেওয়ার ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে, শ্রমিকদের মজুরি ও বোনাস দেওয়ার সময় মিথ্যা কথা বলে। অথচ রাষ্ট্র ও পুলিশ মালিকদের পাশেই দাড়াচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রতিমাসের ১ তারিখে যদি বেতন না পায়, তবে দেখা যাবে কোথায় থাকে আইন আর কোথায় থাকে শৃঙ্খলা।
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে থেকে একটি মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিকফ্রন্টের সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুলের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন প্রমুখ।
নিউজবাংলাদেশ.কম