সূচক-লেনদেন উঠা নামায় হস্তক্ষেপ করবে না বিএসইসি
পৃথিবীর কোথাও সূচক ও লেনদেন উঠা নামায় কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করে না পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থারা। কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কমিশন বরাবরই পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেন উঠা নামায় হস্তক্ষেপ করেছিল। কিন্তু বর্তমান নবগঠিত কমিশন এটা করবে না বলে জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান।
শনিবার অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন জানিয়ে রকিবুর রহমান বলেন, উনারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্লাটফর্ম তৈরী করার জন্য কাজ করছেন। তাই আশা করছি, বিএসইসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এই কমিশন পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করে সামনে এগিয়ে যাবে।
নবনিযুক্ত কমিশন পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোড় দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই কমিশন কোন ধরনের অনিয়মকে ছাড় দেবে না। সে যত বড়ই ক্ষমতা হোক না কেনো। এছাড়া সম্মিলিতভাবে পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন না করা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অতি শীঘ্রই অ্যাকশানে যাবে।
বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের উন্নয়ন স্বার্থে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমেধ্যে কমিশন ভাল ভাল কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি কার্যকরি সভা করেছে। যেখানে তারল্য সংকট সমাধানে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে আনা ও ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে লভ্যাংশ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় শিথীলতার সম্ভাবনা তৈরী করেছে। এছাড়া এই কমিশন বন্ড মার্কেট উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে।
পুঁজিবাজারে কম লেনদেন হয়েছে গনমাধ্যমে এমন রির্পোট নিয়ে হতাশ প্রকাশ করে রকিবুর রহমান বলেন, গত ৪ জুন ডিএসইতি অনেক কম লেনদেন হওয়া নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু এই কম লেনদেন হওয়ার পেছনে আবার লকডাউনের আতঙ্ক ও ফ্লোর প্রাইস কাজ করেছিল। তাই কম লেনদেন কারনে বিনিয়োগকারীদের বিচলিত না হবার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং বলেছেন এখন অনেক কম দরে শেয়ার পাবেন। তাই বিচলিত হবে না বরং বিনিয়োগ করুন।
করোনাভাইরাস পার্দুভাব কারনে লকডাইন সময় ব্যাংক খোলা কিন্তু পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল, সেটা খুবই দুঃখজনক জানিয়ে বলেন, পুঁজিবাজারে গত কয়েকদিনের লেনদেনের ৮৭ শতাংশ অনলাইনে হয়েছে। এই সময় ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। চাইলে এ বাজারে ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে শতভাগ লেনদে করা সম্ভব। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংক খোলা রেখে পুঁজিবাজার বন্ধ না রাখার অনুরোধ করেন।
বীমার টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিট ও বন্ডে চলে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে টাকা রয়েছে। তাদের টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিট ও বন্ডে রাখছে। অথচ সেখানে রিটার্ন খুবই কম। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর অধিকাংশ টাকা এফডিআর। অথচ পৃথিবীব্যাপি মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার মতো অনেক ভাল কোম্পানি রয়েছে।
এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ মন্তব্যে করে তিনি বলেন, যারা ডে ট্রেডার, তাদের কোন সুযোগ নেই। যারা বছরের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্য এখনই সুযোগ। তাই সবাইকে বিনিয়োগে আসার এবং সক্রিয় হওয়ার জন্য আহবান করব। আপনারা যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করুন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএমজেড/এনডি