News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ৪ জুন ২০২০
আপডেট: ০৪:২০, ১০ জুন ২০২০

পতন রোধে ফ্লোর প্রাইস বহালসহ কালো টাকা বিনিয়োগের দাবি

পতন রোধে ফ্লোর প্রাইস বহালসহ কালো টাকা বিনিয়োগের দাবি

পুঁজিবাজারের পতন রোধকল্পে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে এবং দশ টাকার নিচে বা ফেস ভ্যালুর নিচের প্রত্যেকটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ভ্যালু ন্যূনতম দশ টাকায় নির্ধারণ করতে দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুজিঁবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের তারল্য বাড়াতে বিনা শর্তে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দাবি করেন তারা।

পুঁজিবাজার উন্নয়নে গত বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাত করে সংগঠনটির নেতারা ২৬ দাবি তুলে ধরেছে। 

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গতকাল আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাত করেছি।  এসময় আমরা পুঁজিবাজার উন্নয়ন স্বার্থে ২৬ দাবি তুলে ধরেছি।

কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান আমাদের দাবি গুলো পড়েছেন এবং বলেছেন যে পুঁজিবাজারের স্বার্থ রক্ষার্থে বেশকিছু দাবি খুবই গুরুত্বপূর্ন। ইতিমধ্যে এসব দাবির অনেকগুলো আমরা আগেই চিহিৃত করেছি। এবং কাজ শুরুও করে দিয়েছি।

পুঁজিবাজারের পতন রোধকল্পে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল ও বাই ব্রেক আইন বাস্তবায়ন আমাদের এমন দাবি বিষয়ে চেয়ারম্যানের বলেছেন, ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল রাখার ব্যাপারে কাজ হচ্ছে, এ বহাল প্রক্রিয়া চালু হবে। পাশাপাশি বাই ব্রেক আইন বাস্তবায়ন ব্যাপারেও আপনারা শিগগিরই সুখবর পাবেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান আমাদের আশত্ব করে বলেছেন, জাতীয় বাজেটে বিনা শর্তে কালো টাকা শুধুমাত্র শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান বিষয়টি আলোচনা চলছে। আশা করি এটা হয়ে যাবে।

কোম্পানি আইনের 2CC ধারা মোতাবেক শেয়ারবাজারের লিস্টেড প্রত্যেকটা কোম্পানিকে ন্যনূতম ৩০ শতাংশ ও প্রত্যেক পরিচালককে ন্যনূতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারন করার বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান আমাদের বলেছেন, যে কোম্পানি 2CC ধারা মানছে না। তাদেরকে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে দিব। এবং ১৫ দিন সময় দিব কারন জানতে। এরপরও 2CC ধারা অহেতুক ব্যর্থদের কমিশন ব্যবস্থা নিবে।

বাংলাদেশ পুজিঁবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের উল্লেখ্যযোগ্য দাবিগুলো তুলে ধরা- প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদেয় ঐতিহাসিক যুগান্তকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাজারের পতন রোধকল্পে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে এবং দশ টাকার নিচে বা ফেস ভ্যালুর নিচের প্রত্যেকটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ভ্যালু ন্যূনতম দশ টাকায় নির্ধারণ করতে হবে; আগামী কমপক্ষে এক বছর বাজারে নতুন কোন আইপিও, রাইট শেয়ার, প্রেফারেন্স শেয়ার বা কোন প্রকারেই অর্থ উত্তোলনের সুযোগ প্রদান করা যাবে না; বাজারের তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি করার জন্য বিদ্যমান মার্জিন লোন প্রদানের হার ১:০.৫% থেকে বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ১:১.৫ করার দাবি করছি; আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনা শর্তে কালো টাকা শুধুমাত্র শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করতে হবে; সরকার ঘোষিত সকল ব্যাংকগুলোকে শেয়ার বাজারে দুইশো (২০০) কোটি টাকা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধি করে ন্যূনতম পাঁচশো (৫০০) কোটি টাকা পর্যন্ত উন্নীত করতে হবে; বাজারের স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে অতি দ্রুত মহামান্য হাই কোর্ট কর্তৃক নির্দেশিত “বাইবেক কোম্পানি আইন” পাশ করতে হবে এবং কোম্পানি আইনের 2.CC ধারা মোতাবেক শেয়ার বাজারের লিস্টেড প্রত্যেকটা কোম্পানিকে ন্যনূতম ৩০% শেয়ার ধারন করতে হবে এবং পৃথকভাবে পরিচালককদেরকে ন্যনূতম ২% শেয়ার ধারন করতে হবে; চলতি বছরের ডিসেম্বর ২০২০ ইং পর্যন্ত সকল বিনিয়োগকারীর বিও চার্জ মওকূফ করতে হবে; বাজারের তারল্য সংকট দূরীকরণ ও আন্তজার্তিক মানদন্ডে উন্নিত করার জন্য ডে ট্রেডিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি করছি; শেয়ার বাজারের তারল্য সংকট দূর করার জন্য আসন্ন বাজেটে শুধুমাত্র বাংলাদেশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শর্তে ব্যক্তিগত আয়কর মুক্ত সীমা ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা এবং এসএমই শ্রেণিভুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য আয়কর মুক্ত ন্যূনতম সীমা ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করছি; সকল ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, ইস্যু ম্যানেজারদেরকে শুধুমাত্র শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের শর্তে প্রচলিত এফডিআরের ন্যায় স্বল্প সুদে এফডিআর, এসটিআর, এলটিআর অথবা নিজস্ব মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের অনুমতি দ্রুত প্রদান করতে হবে; বাজারে প্যানিক সৃষ্টি করার জন্য মুষ্টিমেয় চিহ্নিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসএপের মাধ্যেম ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কোম্পানির প্রাইস সেন্সেটিভ নিউজের নামে আনঅথোরাইজড/বেআইনি/অনৈতিক ভাবে শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি এক্ট এবং পেনাল কোডের আওতায় দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি করছি; আন্তজার্তিক অর্থনীতি, শেয়ার বাজার এবং ব্যাংকের মানদন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে এদেশীয় সরকারি-বেসরকারি খাতকে আরও অধিকতর শক্তিশালী ও গতিশীল করার জন্য বাস্তবতার আলোকে সময় উপযোগী ব্যাংক ঋণের বিকল্প হিসেবে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট সৃষ্টি করতে হবে; বাজারে বর্তমানে লিস্টেড সাইত্রিশ (৩৭) টি মিউচুয়াল ফান্ডের ভূমিকা ক্ষতিয়ে দেখতে হবে; শেয়ার বাজারের স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বন্ধ করে সুসম্পর্ক ও সুসমন্বয় সৃষ্টি করতে হবে; ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং এক্ট অতি দ্রুত চালু করতে হবে, ওটিসি মার্কেট বন্ধ করে সেখানকার কোম্পানি সমূহকে প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও মূল বাজারে ফিরিয়ে আনতে হবে বা তাদের স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি বিক্রি করে শেয়ারের সংখ্যা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দিতে হবে, পাশাপাশি জেড ক্যাটাগরি পদ্ধতি বন্ধ করতে হবে; সিডিবিএল, ডিএসই, সিএসই কে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজাতে হবে। শতভাগ ডিজিটাল,অনলাইন ও আধুনিক সেবার আওতায় তাদেরকে দ্রুত নিয়ে আসতে হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/ডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়