যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে ২ বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানিতে আগামী দুবছর শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের উপজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহকারী ম্যাথিউ পটিনজারের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে তিনি এ সুবিধা চান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা যেন বাংলাদেশের গার্মেন্ট সেক্টরে ক্রয়াদেশ বাতিল না করে সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তাও চান আবদুল মোমেন।
এ সময় করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহকারী ম্যাথিউ পটিনজার। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সমুদ্রে ভাসমান মিয়ানমারের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ম্যাথিউ পটিনজার।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার দায়িত্ব কেবল বাংলাদেশের নয়; অন্যান্য দেশেরও উচিত তাদের আশ্রয় দেয়া এবং দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া আবদুল মোমেন বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বন্ধুরাষ্ট্রসমূহের জোরালো ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদানেরও অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের বিনিয়োগের পরিবেশ ভালো উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহবান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক জোনের মধ্যে কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক জোন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অনুরোধ করেন।
তা ছাড়া বাংলাদেশে ২৮টি আইটি পার্ক তৈরি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের পরিশ্রমী ও মেধাবী যুবকদের জন্য আইটি সেক্টরকে সম্ভাবনাময়ী উল্লেখ করে এ খাতেও যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিযোগের আহ্বান জানান আবদুল মোমেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে; হিংসাত্মক এবং ধর্মীয় উসকানিমূলক প্রচারণা চালায়, কেবল তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়। বাংলাদেশের গণমাধ্যম অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে মুক্তভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে এখন পিপিই ও মাস্ক তৈরি হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে এসব চিকিৎসা সামগ্রী আরও বেশি পরিমাণ আমদানি করতে পারবে। বাংলাদেশের ওষুধসামগ্রী যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরোধ করেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীবিষয়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেরিত এক পত্রের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হোয়াইট হাউসের এ মুখপাত্র।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেএইচ