কুয়েতের জন্য শ্রমিক প্রস্তুত, চট্টগ্রামে হবে তেল শোধণাগার
ঢাকা: কুয়েত যদি চায়, বাংলাদেশ আরও শ্রমিক পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে এবং বাংলাদেশে কুয়েত সরকারের তেল পরিশোধণাগার স্থাপনের জন্য জমিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা।
সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি লে. জেনারেল সুলাইমান ফাহাদ আল ফাহাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। সফরে ফাহাদ ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে অবকাঠামোতে কুয়েতের আরও বিনিয়োগ কামনা করেছেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, চট্টগ্রামে একটি তেল পরিশোধনাগার স্থাপনে কুয়েতের আগ্রহ প্রসঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য জমি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কুয়েত যে কোনো সময় কাজ শুরু করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, উপসাগরীয় এ দেশটিতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন। তারা কুয়েতের উন্নয়নে বিপুল অবদান রাখছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কুয়েত যদি চায়, বাংলাদেশ আরও শ্রমিক পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে।”
এছাড়া বৈঠকে শেখ হাসিনা সিরামিক, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ওষুধের মতো বিশ্বমানের বাংলাদেশী পণ্য আমদানি করার জন্য কুয়েত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কুয়েতের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ দুঃসময়ে কুয়েতের পাশে দাঁড়িয়েছে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমরা কুয়েতের পাশে থাকব।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান আমীর শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-জাবের যখন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি রচিত হয়। তখন থেকেই দিন দিন দু’দেশের সম্পর্ক জোরদার হতে থাকে।” ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সুসংগঠিত বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কুয়েতের সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারে।”
লে. জেনারেল সোলায়মান ফাহাদ কুয়েতের আমীরের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কুয়েত সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি ইরাক-কুয়েত যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদানের কথা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, “যুদ্ধের পর বাংলাদেশী শ্রমিকরা কুয়েত পুনর্গঠনে কাজ করেছেন। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনেক সদস্য শাহাদতবরণ করেছেন। কুয়েত পুনর্গঠন কাজেও বহু বাংলাদেশী শ্রমিক মারা গেছেন। তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা কখনও তাদের ভুলব না ।”
বাংলাদেশকে কুয়েতের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে লে. জেনারেল সোলায়মান ফাহাদ বলেন, “আগামী দিনগুলোতে দুই ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/জেএস/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম