News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক  || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

সংকটের মধ্যেই দেশে এলো ৪ জাহাজ সয়াবিন তেল

সংকটের মধ্যেই দেশে এলো ৪ জাহাজ সয়াবিন তেল

ছবি: সংগৃহীত

রমজানের আগেই বাজারে ভোজ্যতেল নিয়ে শুরু হয়ে গেছে কারসাজি। অভিযোগ উঠেছে কোম্পানিগুলোই তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে বাজারে সংকট থাকায় চাহিদামতো সয়াবিন তেল (বোতলজাত) পাওয়া যাচ্ছে না।

এর মধ্যে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে চার দিনের ব্যবধানে এসেছে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের চারটি জাহাজ। এ জাহাজগুলোর মাধ্যমে ৫২ হাজার টন সয়াবিন তেল আনা হয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থেকে। এক মাস আগেই চট্টগ্রামের উদ্দেশে জাহাজগুলো রওনা হয়।

এসব অপরশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হওয়ায় বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের যে সাময়িক সংকট চলছে তা কেটে যাবে। সয়াবিনের দাম সমন্বয় করায় রোজার আগে আমদানি আরও বাড়বে আশা সংশ্লিষ্টদের।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ বাড়ায় বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের যে সাময়িক সঙ্কট চলছে, তা কেটে যাবে। সয়াবিনের দাম সমন্বয় করায় রোজার আগে আমদানি আরো বাড়বে।

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার এমটি আরডমোর শায়ানি ও এমটি ডাম্বলডোর নামে দুই জাহাজে বন্দরে আনা হয়েছে ২১ হাজার ৫০০ টন সয়াবিন তেল। আজ মঙ্গলবার বন্দর জলসীমায় পৌঁছেছে এমটি সানি ভিক্টরি ও এমটি জিঙ্গা থ্রেশার নামের আরো দুটি জাহাজ। এই দুই জাহাজে রয়েছে ৩০ হাজার ছয় শ’ টন সয়াবিন তেল। এর মধ্যে এমটি আরডমোর শায়ানি জাহাজ থেকে তেল খালাস শেষ হয়েছে। সোমবারই জাহাজটি বন্দর ছেড়েছে। জাহাজগুলোর মধ্যে সানি ভিক্টরি এসেছে ব্রাজিল থেকে, বাকি তিনটি আর্জেন্টিনা।

জাহাজ কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে, এই চার জাহাজে সয়াবিন তেল আমদানি করেছে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বা এমজিআই ও টিকে গ্রুপ। এর মধ্যে টিকে গ্রুপের ২৫ হাজার টন, সিটি গ্রুপের ২০ হাজার টন ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সাত হাজার টন সয়াবিন তেল রয়েছে।

এ ব্যাপারে টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার বলেন, সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ে সরকারের আশ্বাসে এসব সয়াবিন আমদানির জন্য অনেক আগেই ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। এখন মূল্য সমন্বয়ের কারণে আমদানি সামনে বাড়বে। রোজার সময় সয়াবিনের সঙ্কট হবে না। যদিও এখন যেসব জাহাজ আসছে, সেগুলোতে টনপ্রতি সয়াবিনের দর এক হাজার ২১৭ ডলার পড়েছে।

এদিকে গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার।

সরকার যে কয়েকটি পণ্যের দর ঠিক করে দেয়, তার একটি হলো সয়াবিন তেল। বিশ্ববাজারে দুই মাসের বেশি সময় ধরে সয়াবিনের দাম বাড়লেও সরকার রোববার পর্যন্ত দাম সমন্বয় করেনি। দুই দফা শুল্ক-কর কমিয়ে দাম ঠিক রাখে। তাতে সরকার নির্ধারিত বোতলজাত তেলের দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়নি কোম্পানিগুলো। কিন্তু পাইকারি বাজারে দর ওঠানামা করে বিশ্ববাজারের দরদামের ওপর। সেখানে সরকারের তদারকির সুযোগ কম। বিশ্ববাজারে বাড়তে থাকায় পাইকারি বাজারে খোলা তেলের দাম সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে লিটারপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে যায়।

এ পরিস্থিতিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো বোতলজাতের পরিবর্তে খোলা সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। তাতে পাইকারি বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের সরবরাহ থাকলেও খুচরা দোকানে বোতলজাত তেলের সঙ্কট তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন থেকে বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এত দিন ছিল ১৬৭ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৫৭ টাকা। দাম পুনর্নির্ধারণের কারণে বন্দরে আসা চার জাহাজের সয়াবিন তেলের বাজারমূল্যও বেড়ে গেছে। যেমন বন্দরে আসা ৫২ হাজার টন তেল পরিশোধন করে বাজারজাত হলে বোতলজাত সয়াবিন হিসেবে বাজারমূল্য দাঁড়াবে ৯৯৬ কোটি টাকা। দাম বাড়ানোর আগে যা ছিল ৯৫০ কোটি টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি হওয়া এই সয়াবিন তেল প্রথমে জাহাজ থেকে খালাস করে রাখা হবে কাস্টমস নিয়ন্ত্রিত ট্যাংক টার্মিনালে। সেখান থেকে শুল্ক-কর পরিশোধ করে কারখানায় পরিশোধনের জন্য নিয়ে যাবে কোম্পানিগুলো। এরপর পরিশোধন করে বাজারজাত হবে এই সয়াবিন তেল। তাতে দুয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়