News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ২৫ মে ২০২১

যে মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী ভ্যাট দেননা

যে মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী ভ্যাট দেননা

নরসিংদীতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুটো মার্কেটে জরিপ পরিচালন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা। ওই জরিপে দেখা যায়, প্রায় শতভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাটের নিবন্ধন নেই। আইনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা দিচ্ছে না ভ্যাট। আবার অনেকে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেও তা সরকারী কোষাগারে জমা দিচ্ছেনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, আজকের নরসিংদীর এই জরিপে অংশ নেয় ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলাম ও তার দল। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওই দুটো মার্কেট হলো- ইনডেক্স প্লাজা ও জামান শপিং কমপ্লেক্স। উভয় মার্কেট নরসিংদীর ব্যস্ততম স্টেশন রোডে অবস্থিত। প্রথমটি ৪ তলা ও পরেরটি ৩ তলা বিশিষ্ট। 
জরিপ অনুযায়ী দেখা যায়, ইনডেক্স প্লাজা মার্কেটের চালু দোকান রয়েছে ২১৪টি। এর মধ্যে অনিবন্ধিত দোকান ২১৩টি। ভ্যাটে নিবন্ধিত দোকান সংখ্যা মাত্র ১টি। এর নাম লালজবা কসমেটিক্স। ওই নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি গত দশ মাসে কোন ভ্যাট পরিশোধ করেনি। প্রতিষ্ঠানটি শূন্য হারে রিটার্ন দাখিল করেছে। ওই জরিপে ইনডেক্স মার্কেটে নিয়মিত ভ্যাট প্রদান করে এমন কোন প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।
অন্যদিক ভ্যাট গোয়েন্দা নরসিংদীর জামান শপিং কমপ্লেক্স মার্কেট পরিদর্শন করে। এতে দেখা যায়, সেখানে দোকান রয়েছে ২৩টি। এর মধ্যে ২০টি দোকান চালু আছে, যারা সবগুলোই অনিবন্ধিত। কোন দোকানের নিবন্ধন নেই। এসব দোকান কোন ভ্যাট প্রদান করে না। অথচ এসব দোকানকে ভ্যাটে নিবন্ধিত হওয়া ও ভ্যাট দেয়া বাধ্যতামূলক। 
নরসিংদী শহরের প্রাণ কেন্দ্রেই এই দুটো শপিং কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে। এসব শপিং মলে তৈরি পোশাক, পাদুকা, জুয়েলারি, স্টেশনারিজ, ইলেক্ট্রনিক্স, ডিপার্টমেন্টালসহ অন্যান্য বিপনীবিতান রয়েছে। ভ্যাট আইন অনুসারে এদের প্রত্যেকের উপর বিক্রির উপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। জরিপে দেখা গেছে, কোন কোন ক্ষেত্রে ক্রেতার নিকট ভ্যাট আদায় হলেও তা সরকারী কোষাগারে জমা করা হয়নি।
এর আগে গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর ভ্যাট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য ৪টি জরিপ টিম গঠন করে। রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে এসব টিম এই জরিপ শুরু করেছে। ঢাকার ভ্যাট কমিশনারেট (ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম) এর আওতাধীন চারটি টিম গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটে এই জরিপ করছে। এর মধ্যে সহকারী পরিচালক মালেকিন নাসিরের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারে রয়েছেন। উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম আছে ধানমন্ডির সানরাইজ প্লাজা ও অর্কিড প্লাজায়। এছাড়া সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালিনের নেতৃত্বে একটি টিম গুলশান-১-এর নাভানা টাওয়ার ও বারিধারার অনন্যা মার্কেটে জরিপ করছেন। সহকারী পরিচালক মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম আছে রুপগঞ্জ হাজী হোসেন প্লাজায়। 
গত সোমবারের জরিপ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, গতকালের জরিপে দেখা যায় ডেমরার (ঢাকা পূর্ব) স্টাফ কোয়ার্টারের হোসেন মার্কেটে দোকান রয়েছে ২২১টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১২টি ও নিবন্ধন নেই ২০৯টি। অবশ্য নিবন্ধন ওই দুটি দোকান ৫ হাজার টাকার উপরে ভ্যাট দেয়। স্টাফ কোয়ার্টারের আরেক মার্কেট হাজী হোসেন প্লাজায় দোকান রয়েছে ১৮৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১০টি ও নিবন্ধন নেই ১৭৮টি। অবশ্য মাসে ৫ হাজার টাকার বেশি ভ্যাট দেয় মাত্র ১টি দোকান। ধানমন্ডিতে (ঢাকা দক্ষিণ) সানরাইজ প্লাজায় দোকান রয়েছে ৫৭টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩০টি ও নিবন্ধন নেই ২৭টি। অবশ্য মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় মাত্র ৪টি দোকান। বাকী ২৬টি দোকান মাসে ৫ হাজার টাকার নিচে ভ্যাট দেয়। মোহাম্মদপুরের (ঢাকা পশ্চিম) টোকিও স্কয়ারে দোকান রয়েছে ২৪০টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ১৯৮টি ও নিবন্ধন নেই ৪২টি। অবশ্য মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয় মাত্র ২টি দোকান। বাকী ৪০টি দোকান ৫ হাজার টাকার নিচে ভ্যাট দেয়। গুলশান ১ সার্কেল (ঢাকা উত্তর) নাভানা শপিং কমপ্লেক্সে দোকান ২৮টি। এদের মধ্যে নিবন্ধন আছে ২৬টি ও নিবন্ধন নেই ২টি। 
এছাড়া বারিধারা ডিওএইচএসে (ঢাকা উত্তর) অনন্যা শপিং সেন্টারে মোট দোকান রয়েছে ৫২টি। এর মধ্যে নিবন্ধন আছে ৩১টি ও নিবন্ধন নেই ২১টি। এদের মধ্যে নিয়মিত ভ্যাট দেয় ১১টি। অবশ্য মাসে ৫০০০ টাকার বেশি ভ্যাট দেয়না কেউ। আবার নিবন্ধিত কিন্তু ভ্যাট দেয়না ২০টি দোকান। 
উপরোক্ত জরিপ অনুযায়ী ভ্যাট আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান মইনুল খান।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/এএস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়