অবরোধ-হরতালেও চালের বাজার স্বাভাবিক
ঢাকা: বিরোধী জোটের টানা অবরোধে-হরতালেও চালের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কয়েকটি পণ্যের মওসুম ফুরিয়ে যাওয়ায় কিছুটা দাম বেড়েছে। অন্যদিকে বৈশাখ ঘনিয়ে আসায় বাজারে ইলিশ মাছের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বাজারগুলোতে পিঁয়াজ, রসুনসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির।
শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩৫ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এর দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
চালের বাজার
সাধারণ মানের নাজির (মিনিকেট) প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৪৮ টাকা, উত্তম মানের ৪৮ টাকা থেকে ৫৬ টাকা, মাঝারি চাল প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪৪ টাকা, সাধারণ মানের পাইজাম, লতা চাল ৩৮ থেকে ৪২ টাকা, উত্তম মানের ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা, চায়না ইরি প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা, গুটি স্বর্ণা চালে বিক্রি হচ্ছে ২৬ থেকে ২৮ টাকা দামে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ, কাওরান বাজার, ঠাঁটারি বাজার, বাদামতলী, সূত্রাপুর, শ্যাম বাজার, মৌলভী বাজার, রহমতগঞ্জ, মো. পুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল, নিউ মার্কেট, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, মিরপুর-১ ও ৬ এবং আজিমপুর বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে মহল্লার মুদির দোকানে রাজনৈতিক অস্থিরতার দোহাই দিয়ে মানভেদে চালের দাম এক থেকে দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বাজারের খুচরা দোকানিরা জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলেও বাজারে নিত্য পণ্যের সরবরাহ ঠিক থাকায় এর কোনো প্রভাব পড়েনি। কর্মসূচির নামে পেট্রোলবোমায় জানমালের ক্ষয়-ক্ষতিতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। প্রথম দিকে চালের দাম দুই থেকে তিন টাকা বাড়লেও বর্তমানে চালের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
বাবু বাজারের ভূইয়া রাইস এজেন্সির কর্মকর্তা সোহেল নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “অবরোধ বা হরতালে চালের আমাদানিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বর্তমানে পণ্য আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। বাজার মূল্যও অপরিবর্তিত রয়েছে।”
অবরোধের শুরুর দিকে কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বাড়লেও বর্তানে অনেক চালের দাম কমতির দিকে রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি পার্শ্ববর্তী দেশের বাজার মূল্য স্বাভাবিক থাকার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারোয়ার জাহান তালুকদার নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় নিত্যপণ্য বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজার মূল্য স্বাভাবিক থাকায় আপাতত আমাদের ভ্রম্যমান (ট্রাক) দোকান বন্ধ রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে। সেখানে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় টিসিবি রমজান মাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে যে কোনো অবস্থার জন্য টিসিবি প্রস্তুত রয়েছে এবং মজুদ পর্যাপ্ত পরিমান রয়েছে।”
ব্যবসায়ীদের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “পরিস্থিতি প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। এখন ভালো হয়ে এসেছে। সাধারণ মানুষ বুঝতে শুরু করেছে এ অবস্থায় চলতে দেয়া যায় না। যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সে দেশকে পিছিয়ে দেয়ার কোনো কারণ নাই। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকায় বাজার মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/জেএস/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম