News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৫ মে ২০২০
আপডেট: ০৪:২৫, ১৮ মে ২০২০

চালের দাম বস্তায় ৬০০ টাকা কমেছে

চালের দাম বস্তায় ৬০০ টাকা কমেছে

এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মিলগেট থেকে চাল প্রস্তুত করে বাজারে ছাড়ায় মোকামে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চালে কমেছে সর্বোচ্চ ৬শ’ টাকা।
এতে রাজধানীতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে সর্বোচ্চ ৭ টাকা কমেছে। এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে দেশে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে এবার আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কৃষকদের শাক-সবজিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বেশি মাত্রায় উৎপাদনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কৃষিমন্ত্রীকেও বিশেষভাবে নজরদারি করতে বলেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ২০৩ লাখ ৮৯ হাজার টন বোরো ধান।
এছাড়া ২০১৯-২০ চলতি অর্থবছরে ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০৪ লাখ ৩৬ হাজার টন।
অধিদফতরের সরেজমিন উইং সূত্র বলছে, দেশের হাওর অঞ্চলসহ যেসব জায়গায় বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে, সেখানে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে ৪৮ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। তাই ধান কাটার পর মোট উৎপাদনের চিত্র বলা যাবে। আর এ ধান থেকে প্রস্তুত করা চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও দিনাজপুরের চালের মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ দিন প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ২১শ টাকায়। যা ১৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৭শ টাকায়। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, বস্তায় দাম কমেছে ছয়শ টাকা।
এছাড়া প্রতিবস্তা নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে ২৪৫০ টাকা। যা ১৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৬৫০ টাকায়। সেক্ষেত্রে নাজিরশাল চালে বস্তায় কমেছে ২০০ টাকা। বিআর-২৮ জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ১৮শ টাকা। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২১শ টাকা।
এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছে ১৭৫০ টাকা। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার টাকা।
কুষ্টিয়া জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, “এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাল মিল পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে। ধান থেকে চাল প্রস্তুত করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এতে মোকামে ৫০ কেজি চালের বস্তায় সর্বোচ্চ ছয়শ টাকা কমেছে। সামনে চালের দাম আরও কমবে।”
রাজধানী সর্ব বৃহৎ চালের পাইকারি আড়ত বাদামতলী ও কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকায়। প্রতিকেজি নাজিরশাল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকায়।
বিআর-২৮ চাল প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকায়। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪৪ টাকায়। এছাড়া মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকা কেজি। যা ১০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “নতুন ধান আসায় মোকামে সব ধরনের চালের দাম কমেছে। এ কারণে পাইকারিতেও চালের দাম কমছে। তবে আর কয়েকদিন পর পুরোপুরি ধান কাটা হলে চালের দাম আরও কমে আসবে।”
তিনি জানান, করোনার এ সময় বাজারে চালের কোনো সংকট নেই।
অন্যদিকে রাজধানীর নয়াবাজার, মালিবাগ বাজারের খুচরা চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকায়। যা ১৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। প্রতিকেজি নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ৫৬-৫৮ টাকায়। যা ১৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬০-৬২ টাকায়। এছাড়া বিআর-২৮ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪১-৪২ টাকা। যা ১৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকা, যা ১৩ দিন আগে আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়।
মালিবাগ বাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক মো. দিদার হোসেন “পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম গত ১৫ দিন ধরে কমছে। কারণ চাহিদার থেকে সরবরাহ বেড়েছে। সে ক্ষেত্রে কম দামে এনে কম দামে বিক্রি করছি।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়