দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নিজেদের আকাশসীমা রক্ষায় প্রস্তুতি রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার যশোরের বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে অনুষ্ঠিত বিমানবাহিনীর ১১ এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ১১ এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা আছে যে, বাংলাদেশেই আমরা আমাদের যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারব। কাজেই এর উপর গবেষণা এবং আমাদের আকাশসীমা রক্ষা আমরা নিজেরাই যেন করতে পারি, সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
“দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।”
বিমানবাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতার দেওয়া প্রতিরক্ষা নীতিমালার ভিত্তিতে আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী করার জন্য, আধুনিক করার জন্য ফোর্সেস গোল-২০৩০ আমরা প্রণয়ন করেছি এবং তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি।”
ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীতে মিগ-২৯সহ বিভিন্ন যুদ্ধবিমান, সর্বাধুনিক অ্যাভিওনিক্স সমৃদ্ধ পরিবহন বিমান, ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স র্যাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং নতুন নতুন ঘাঁটি, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার কথাও জানান সরকার প্রধান।
বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষতা আনতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কার্যক্রম বিমানবাহিনীর সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। এই পতাকা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যেকোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়।
“১১ স্কোয়াড্রনের বৈমানিকদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে দেশের আকাশসীমা প্রতিরক্ষায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদান করা হল। এই সম্মান ও গৌরব অর্জন করায় আমি ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
“কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং দেশসেবার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেয়েছেন, তার মর্যাদা, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ও আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যখন দায়িত্ব পালন করেন, আমি মনে করি আপনারা সব সময় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবেন। যেন বাংলাদেশের মানমর্যাদা সবসময় বৃদ্ধি পায়। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে আপনারা আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।”
দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সম্মানজনক অবস্থান, জাতিগঠনমূলক কাজে নিয়োজিত রাখার পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবে বাহিনীর ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান প্রান্তে এই সময় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি