মির্জা কাদেরকে দল থেকে অব্যাহতির নির্দেশনা ৩০ মিনিট পর স্থগিত
দলীয় সব প্রকার কার্যক্রম থেকে আব্দুল কাদের মির্জা অব্যাহতি দিয়ে জারি করা নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রজ্ঞাপন আধ ঘণ্টার মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার জন্য সুপারিশ ও দলের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জেলা আওয়ামী লীগ। পরে তা স্থগিত করেছেন জেলা আ.লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা সভাপতি বলেন, আবদুল কাদের মির্জাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সুপারিশে আমি সশরীরে স্বাক্ষর করার সুযোগ হয়নি। মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের যে সুপারিশ করা হয়েছে তা আমি সভাপতি হিসেবে অনিবার্য কারণে স্থগিত করলাম।
এর আগে, শনিবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে (পত্র) এ মির্জাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ ও দলের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতির জন্য কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
পত্রটিতে উল্লেখ করা হয়, বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে বিভিন্ন সভা সমাবেশে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে সংগঠন বিরোধী মিথ্যা, অশালীন বক্তব্য ও আপত্তিকর উক্তি করে। নেতা-কর্মীদের হুমকি প্রদান করার অভিযোগে আবদুল কাদের মির্জাকে সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
একইসাথে সংগঠন বিরোধী উল্লেখিত কারণ ও দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল কাদের মির্জাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের আগ থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনায় আসে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। আর এ আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিলেন বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ওবায়দুল কাদের এর ছোট ভাই। এরই মধ্যে আবদুল কাদের মির্জা জেলার ডিসি, এসপি, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি, পরিদর্শক’সহ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেন। একইসাথে নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর অপরাজনীতি, টেন্ডার-বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্য ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিচারের দাবীতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা আন্দোলন করে আসছেন।
এসময় তিনি নোয়াখালী ও ফেনীর নাম উল্লেখিত দু’নেতার সাথে আঁতাত করার অভিযোগ এনে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি, পরিদর্শকের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন ও হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ডি