মঙ্গলের বুকে নাসার মহাকাশযানের সফল অবতরণ
অবশেষে মঙ্গলের পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান ‘পারসিভারেন্স’। ছয় চাকার এই স্বয়ংচালিত যানটি পৃথিবী থেকে তার ৪৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার পথের যাত্রা শুরু করেছিল প্রায় সাত মাস আগে। খবর বিবিসির।
মহাকাশযানটির সফল অবতরণ বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবতরণের শেষ মুহূর্তটিকে ‘সেভেন মিনিটস অব টেরর’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন তারা। কেননা অবতরণের সময় দ্রুত বেগে আছড়ে পড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে এসব যান। তাই সময়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
পারসিভারেন্স সফলভাবে মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণের পর নাসার এই মঙ্গল মিশনের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ম্যাট ওয়ালেস বলছেন, ‘সুখবর হলো যে, আমি ধারণা করছি এই মহাকাশযানটি এখন বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।’
অবতরণের সংকেত ইতোমধ্যেই লস এঞ্জেলেসের জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরিতে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানীদের আতঙ্ক ছিল, মঙ্গলের মাটিতে প্রচণ্ড গতিতে আছড়ে পড়ার সময়ে ছয় চাকার যানটির কোনো ক্ষতি যেন না হয়। এজন্য সেটিকে একটি ক্যাপসুলের মধ্যে ঢুকিয়ে মঙ্গলযানের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবতরণের পর ভালো অবস্থানে রয়েছে পারসিভারেন্স। খুব শিগগিরই এটি মঙ্গলের পৃষ্ঠে অভিযানও শুরু করবে। ছয় চাকার ওই অনুসন্ধানযান মঙ্গলপৃষ্ঠের ছবি তুলবে, মাটির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করবে এবং সেই সব ছবি ও তথ্য পাঠাতে থাকবে।
নাসার পারসিভারেন্স মহাকাশযানটির রোভার অংশটিতে রয়েছে অবতরণের কোনরকম সমস্যা এড়ানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তি
পারসিভারেন্স সফলভাবে অবতরণ করায় মঙ্গলগ্রহে অতীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এর আগে এত উন্নত যন্ত্রপাতি নিয়ে কোন গ্রহে বৈজ্ঞানিক মিশন পাঠানো হয়নি এবং এত সম্ভাবনাময় একটা স্থানকে লক্ষ্য করে কোন রোবটও এর আগে কখনো নামানো হয়নি।
মঙ্গলপৃষ্টের যে স্থানে মনুষ্যবিহীন যানটি অবতরণ করেছে সে হল স্থানটি জেযেরো ক্রেটার। উপগ্রহচিত্রের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের ধারণা একসময় এই গহ্বরের স্থানটিতে বিশাল একটি হ্রদ ছিল। হ্রদটিতে প্রচুর পানি ছিল এবং সম্ভবত সেখানে জীবনও ছিল।
মনুষ্যবিহীন যানটি মঙ্গলে সফলভাবে অবতরণের পর উল্লসিত নাসার বিজ্ঞানীরা
জেযেরো গহ্বরের ধুলোবালুর মধ্যে থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে রোবট যানটি, যা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে গ্রহটিতে অতীতে জৈব কোন কর্মকাণ্ডের হদিস ছিল কিনা। সবচেয়ে লক্ষণযুক্ত ও সম্ভাবনাময় নমুনা পৃথিবীতে পাঠানো হবে ভবিষ্যত মিশনের প্রস্তুতির জন্য।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ডি