কোরিয়ান ইপিজেডের আইটি জোনকে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষণা
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক কোরিয়ান ইপিজেডের প্রায় ১০০ একর জায়গায় প্রস্তাবিত হাই-টেক পার্ককে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, এই হাইটেক পার্ক দেশে ইনোভেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি ও ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এতে দেশের আইটি সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
সোমবার বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড এবং কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড)’র মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কেইপিজেড মিলনায়তনে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা জেবিন ও কোরিয়ান ইপিজেডের পক্ষে এর চেয়ারম্যান ও সিইও কিহাক সাং এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যোর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত লি জেন কিউন ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম ।
সমঝোতার আওতায় কোরিয়ান ইপিজেডের প্রায় ১০০ একর জায়গায় প্রস্তাবিত হাই-টেক পার্কটি বিনিয়োগে নীতিগত সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি যৌথভাবে কাজ করবে।
কোরিয়ান ইপিজেডে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ স্পেশালাইজড ল্যাব স্থাপনে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।
পলক বলেন, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে উদ্যোক্তা এবং স্টার্ট-আপদের জন্য স্কেল-আপ প্রোগ্রাম, ট্রেনিং, কোচিং ও মেন্টরিং করা হবে ।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে চুয়েটে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এছাড়া চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বন্দর নগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম আইটি নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশী-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালে চট্রগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২৫০০ হাজার একর জমি বরাদ্দ প্রদান করেন। বর্তমানে কেইপিজেড এ ২৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে।
পলক বলেন, দেশে ৩৯ টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে ৫টি হাই-টেক পার্কে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন পার্কগুলোতে বেসরকারি খাত থেকে প্রায় ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। পাশাপাশি ১৩ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোরিয়ান ইপিজেড-কে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষণা করায় এখানে বিনিয়োগ ও প্রায় ২০ হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে । সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগগুলোর যুগপৎ প্রয়াসে দেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি আরো বিস্তৃত হবে।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী কেইপিজেড এর বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস