৪৫ সেকেন্ডে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে স্মার্টফোনের অ্যাপ
প্রতিদিন সকালে কাজে ঢোকার আগে নিজ শরীরের নানা পরীক্ষা করিয়ে নেন গুনাশেখর উদয়কুমার (৪১)। তবে এই পরীক্ষার জন্য তাকে কোনো ক্লিনিকে যেতে হয় না, কোনো নার্সেরও দরকার পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে কেবল সঙ্গে থাকা স্মার্টফোনটির। এতে থাকা একটি অ্যাপের মাধ্যমে মাত্র ৪৫ সেকেন্ডেই হৃদস্পন্দন, অক্সিজেনের মাত্রা ও মানসিক চাপের স্তর জেনে নিতে পারেন তিনি। শারীরিক উপসর্গগুলো জানার পর চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে কি না, সে পরামর্শও মেলে স্মার্টফোনের এই অ্যাপে। সিঙ্গাপুরের স্টার্টআপ কোম্পানি নার্ভোটেক তৈরি করেছে এই অ্যাপ্লিকেশন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, নার্ভোটেকের অ্যাপ্লিকেশনটি এখন ব্যবহার করছে সিঙ্গাপুরের নির্মাণশিল্পের প্রতিষ্ঠান কাজিমা। স্মার্টফোনের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কর্মীদের কাজ করাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ও সংক্রমণ ঠেকাতে প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগের অংশ এটি।
সিঙ্গাপুর সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। গত বছরে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া করোনা সংক্রমণ রোধে এখন প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগের পথে হাঁটছে দেশটি। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কাজিমার কর্মীরা নার্ভোটেকের অ্যাপটি ব্যবহার করছেন।
অ্যাপটি একজনের শরীরের পরিস্থিতি জানাতে পারে। এ কাজে স্মার্টফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। স্মার্টফোনের ক্যামেরা ব্যবহারকারীর ত্বকে আলোর প্রতিফলন দেখে হৃদস্পন্দন হিসাব করতে পারে।
নার্ভোটেকের প্রতিষ্ঠাতা জোনাথন লাউ বলেন, ‘সিঙ্গাপুর সরকার এ প্রযুক্তিতে অত্যন্ত আগ্রহী। আমরা এর বাইরে স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও সাড়া পাচ্ছি।’
জোনাথন এর আগে বিমানবাহিনীর পাইলট হিসেবে কাজ করেছেন। তাকে সব সময় নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সেখান থেকেই নার্ভোটেকের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি। তিনি মূলত বিমানচালকদের পর্যবেক্ষণের জন্য পরিধানযোগ্য প্রযুক্তিপণ্যের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এর মধ্যে করোনা মহামারি দেখা দেওয়ায় তিনি স্বাস্থ্যসেবার এই অ্যাপ তৈরি করেন।
অ্যাপটি এখনো প্রাথমিক পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এটি নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদন পেলে স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস