কৃষকের যশোরে স্বপ্নের ধান কাটা শুরু, ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণীরাও
হাজারো স্বপ্ন নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক। গত বছরের মত ইরি ধানেও বাম্পার ফলন আর ভাল দাম আশা করছে তারা। ধান ঘরে তোলার জন্য উঠান গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষাণীরা।
গত মৌসুমে ধানের দাম বেশি হওয়ায় চলতি ইরি ধান মৌসুমে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় ধান চাষে বেশি মনোযোগ দিয়েছে কৃষক। ফলে গত বছরের তুলনায় ধানের উৎপাদনও বেশি হবে বলে আশা করছে উপজেলার সর্বস্তরের কৃষক।
ইরি ধান চাষে খরচ বেশি হওয়ার কারণে গত বছরগুলোতে কৃষকের মাঝে ধান চাষের আগ্রহ অনেক কম ছিল। কিন্তু প্রায় একযুগ পরে গত বছর আমন ধানের ভাল দাম পাওয়ায় চলতি বছরে ইরি মৌসুমে ধান চাষে আগ্রহী হয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। অনেকেই চাষাবাদ ছেড়ে দিলেও তারা আবার নতুন চাষে ফিরে এসেছে। যে কারণে গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে ইরি ধান চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসরণ অধিদপ্তরের তথ্য মোতাবেক চলতি বছরের ১৭ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে ইরি ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ধান চাষ হয়েছে। ধান চাষের পরিমাণ ১৮ হাজার ২শ’ হেক্টর। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি ইরি মৌসুমে ঝিকরগাছা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ধান উৎপাদন হবে এমনটাই আশা করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
এ ব্যাপারে কথা হয়ে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক শিমুল কবীর, রেজাউল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, অহেদ আলী, আহম্মদ আলী, বাবুল আক্তার, মন্টু মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, মাস্টার মনিরুজ্জামান মিন্টু, আশরাফুল ইসলাম, তরিকুল ইসলামের সাথে। সকলের অভিমত প্রায় একই। তারা জানান, ইরি ধান চাষে খরচ অনেক বেশী। পানির সেচ, সার, কীটনাশক সহ শ্রমিক খাটিয়ে লাভবান হওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু আমন চাষের চেয়ে ইরি চাষে ফলন বেশী হওয়ার ফলে কৃষক লাভবান হয়। গত মৌসুমের মত ধানের দাম বেশী হলে কৃষক লাভের মুখ দেখবে।
উপজেলার বাঁকড়া বাজারের ধান ব্যবসায়ী অসীম মোদক ও সাদিপুর বকুলতলা বাজারের নওশের আলী জানান, বর্তমানে ধানের দাম ভাল। তবে পরে কিছুটা কমে যেতে পারে। ইরি মৌসুমে ধানের চাষ হয়। বর্তমানে বাজার দর অনুযায়ী মণপ্রতি ব্রি-২৮, ব্রি-৬৩, মিনিকেট ১১৬০ টাকা, বাঁশমতি সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা, তেজগোল্ড ও সুবোলতা ১১৮০ টাকা বিক্রয় হচ্ছে।
রায়পটন গ্রামের ইসমাইল হোসেন হোসেন জানান, রোজার মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এজন্য রোজাদার ব্যক্তিদের রোজা রাখা খুবই কষ্টকর হবে। একদিকে পুরুষরা মাঠে আর মহিলারা বাড়িতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এক দিকে রান্না-বান্না অন্যদিকে ধান তোলার জন্য উঠান উপযোগী করতে তাদের অনেক পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস