News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:০০, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন দ. কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন দ. কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহারের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা। 

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে মধ্যেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তার দেশের নাগরিকের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন হিউন। 

স্থানীয় সময় বুধবার (৪ ডিসেম্বর) তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। 

সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিউন নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তিনি তার পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল মার্শাল ল ঘোষণা দেওয়ার পর তার সিনিয়র প্রেসিডেনশিয়াল স্টাফরাও সম্মিলিতভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আর বুধবার সকালে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় প্রধান ও সিনিয়র সচিবদের গণপদত্যাগের ঘোষণা সাংবাদিকদের জানানো হয়।

প্রধান স্টাফ চুং জিন-সুকের নেতৃত্বে সিনিয়র কর্মকর্তারা এক বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় অভূতপূর্ব মার্শাল ল ঘোষণার পরই মূলত এই পদত্যাগের ঘটনাগুলো ঘটল। মঙ্গলবার দেশটিতে মার্শাল ল জারির সঙ্গে সঙ্গেই তা সংসদে বাতিল করা হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি যথেষ্ট অস্থির হয়ে পড়ে।

প্রেসিডেন্ট ইউন মঙ্গলবার রাতে ৪৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মার্শাল ল কার্যকর করেন। তবে ৩০০ আসনের সংসদে ১৯০ জন আইনপ্রণেতা তার এই পদক্ষেপের বিপক্ষে ভোট দিলে তাকে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু’র সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সংসদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ইউন তার মার্শাল ল প্রত্যাহার করেন।

এদিকে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তার জায়গায় নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে যাচ্ছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চোই বায়ুং-হিউক।

তবে, ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন জারির সুপারিশ করার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সরানোর আহ্বান জানান।

এর আগে, কিম সামরিক আইন জারি করার জন্য সৈন্যদের আদেশ দেওয়ার জন্য দায় নিয়েছেন। 

সাংবাদিকদের পাঠানো এক বার্তায় বলেছিলেন, মন্ত্রীর আদেশ সকল সৈন্য যারা জরুরি সামরিক আইনের  তাদের দায়িত্ব পালন করেছিল, তাদের সকল দায় আমার।

তবে, তিনি মানুষের উদ্বেগ ও বিভ্রান্তির কারণ হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন।  

এছাড়া, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে প্রেসিডেন্ট ইওলকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। দেশটির আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করতে পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার ভোট প্রয়োজন হয়।  

ইউন সুক ইওলের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন। এছাড়া, ইওল বিরোধী বিক্ষোভ-স্লগানে উত্তাল দক্ষিণ কোরিয়া। তাকে গ্রেফতারের দাবিও জানান বিক্ষুব্ধ জনতা। এমন অবস্থায়, অনিশ্চয়তার মুখে সিউল প্রধানের ভবিষ্যৎ।

দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করতে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার ভোট। দেশটির পার্লামেন্টে ইওলের দলের আইনপ্রণেতার সংখ্যা ১০৮। 

প্রেসিডেন্ট ইওল যদি অভিশংসিত হন, সেক্ষেত্রে ৬০ দিনের মধ্যে বাছাই করতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। আর এই দুই মাস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়