News Bangladesh

পাবনা সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
আপডেট: ২০:৩৫, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

শরীরের আঘাতের সাথে শামীমাকে আকড়ে ধরেছে অভাব!

শরীরের আঘাতের সাথে শামীমাকে আকড়ে ধরেছে অভাব!

পাবনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শামীমা

নারী হয়েও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে মিরাজকে সাথে গত ৪ আগস্ট নিয়ে ছাত্র-জনতার  আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন শামীমা। কিন্তু তাকে ঘরে ফিরতে হয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে।  আহত শরীরের চিকিৎসার খরচ আর সংসার সব মিলিয়ে সামাল দেওয়া শামীমার পক্ষে এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটছে তার।

পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চী ইউনিয়নের সরদার পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী মোছাম্মৎ শামীমা  সুলাতানা (৪৩)।
বিগত ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে স্বামী আব্দুল্লা আল মামুন মারা যান। একমাত্র সন্তান  ছেলে মিরাজ হোসেন আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

শামীমা বলেন, বর্তমানে সিএমএইচ এ চিকিৎসা নিচ্ছি। কিন্তু আমার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় ছেলের পড়াশুনা এবং সাংসারিক খরচ চালাতে পারছি না। আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। ছেলে ঢাকা থাকায় আমাকে বাড়িতে সেবা করারও কেউ নাই।  বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গিয়ে অনেকেই  নিহত ও আহত হয়েছেন। দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীন দেশে যেন আর কোন বৈষম্য না থাকে এটাই আমার চাওয়া। আমার সুচিকিৎসার নিশ্চিতের এবং আন্দোলনকারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।

শামীমা জানান, গত ৪ আগস্ট ১১ টার পর এডওয়ার্ড কলেজ গেট থেকে বৈষম্য বিরোধী মিছিল বের হয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশে আব্দুল হামিদ রোডের ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান করে। ১২ টার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর দিক থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি শুরু করে। পুলিশের হামলায় নিলয় ও জাহিদুল শহিদ হন। গুলির আওয়াজে আন্দোলনকারীরা এদিক ওদিক দৌড়াতে থাকে। এ সময় শামীমাও আহত হন। আহত শামীমাকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা তার শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। 

এর পর একটু সুস্থ হওয়ার পর ডাক্তাররা তাকে একুশদিন পরে দেখা করতে বলেন। কিন্তু শামীমার ব্যাথা আরো বাড়তে থাকায়  তার আগেই তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ব্যান্ডেজ খোলার পর চিকিৎসকেরা দেখতে পান তার পায়ের লিগাম্যান্ট ছিঁড়ে গেছে। তিনি  বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত শামীমার ছেলে মিরাজ হোসেন বলেন, আমি এবং আমার আম্মু প্রথম থেকেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। আমার বাবা বেঁচে নাই, মা অসুস্থ। এ অবস্থায় আমার লেখা পড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা ভীষণ অর্থনৈতিক সংকটে আছি। 

শামীমা বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। গত ৪ আগস্ট বাসায় ভালো লাগছিল না। তাই বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। দুপুর ১২ টার দিকে পাবনা শহরের প্রেসক্লাব এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান করে। সন্ত্রাসীরা যখন মিছিলে গুলি করে তখন আমি শহিদ নিলয়  এবং জাহিদুলের পাশেই ছিলাম। মিছিলে গুলি চালালে আন্দোলনকারীরা ছোটাছুটি শুরু করে। এসময় আমি রাস্তায় পড়ে যাই। আমার শরীরের ওপর দিয়ে অনেকেই পালানোর চেষ্টা করে।  আমি পদপিষ্ট হয়ে আহত হই। পাবনা জেলায় একমাত্র আহত নারী সম্ভবত আমি। আমি বিএনপি সমর্থিত মানুষ। আমার ছেলে মিরাজ ও ঐ মিছিলে ছিল। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়