News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ২২ এপ্রিল ২০২১

এ বছর বোরো উৎপাদন বাড়বে প্রায় ১০ লাখ টন

এ বছর বোরো উৎপাদন বাড়বে প্রায় ১০ লাখ টন

দেশে গত বছরের চেয়ে এ বছর বোরো ধান উৎপাদন প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন বাড়বে।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এছাড়াও, এ বছর আগের বছরের তুলনামূলক হিসেবে প্রায় ৩ লাখ হেক্টরেরও বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে গত বছরের চেয়ে এবছর বোরোতে ৯ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন বেশি হবে বলে কৃষিবিজ্ঞানীরা প্রত্যাশা করছেন।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। ভার্চ্যূয়ালি অনুষ্ঠিত এ পর্যালোচনা সভায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সভাপতিত্ব করেন।
সভায় উল্লেখ করা হয়, দেশে এ বছর বোরো থেকে চাল উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন । আর এজন্য চলতি বছরে বোরো আবাদের আওতায় নির্ধারিত জমির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। কিন্তু বোরো আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে।
এডিপি পর্যালোচনা সভার উদ্ধৃতি দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গতবছর হাওরের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, সেভাবে এ বছরও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়েছে। এ মূহুর্তে হাওরে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোন সংকট নেই। সেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক রয়েছে। একইসাথে, এ বছর কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম সভা সঞ্চালনা করেন। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার সংস্থাপ্রধান ও বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এবছর ধান চালের উৎপাদন বাড়াতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। বেশি জমি চাষের আওতায় আনা, উন্নত জাতের ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়। কৃষকদের বেশি জমিতে ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বীজ এবং সারসহ নানা প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা বাবদ ৭৬ কোটি টাকার প্রণোদনা কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে। এছাড়া, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মীরা করোনাকালেও উৎপাদন বাড়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কৃষকের পাশে থেকেছেন। নতুন উন্নত জাতের ধান চাষের জন্য চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধান কাটায় এগিয়ে আসার পাশাপাশি এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, এবছর হাওরভুক্ত ৭টি জেলা- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত হাওরভুক্ত ৭টি জেলায় ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ। অন্যদিকে শুধু হাওরের ১ লাখ ৮০ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৪০ ভাগ।
সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের আরএডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৩ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার ৪৯ দশমিক ১০ শতাংশ, যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
দেশে বর্তমানে চালের চাহিদার পরিমাণ হচ্ছে প্রায় পৌঁনে তিন কোটি মেট্রিক টন ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়