৬৭২ কোটি টাকার কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কে ক্ষত
যশোরে ৬৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পুরাতন ইটের খোঁয়া,বালু-পাথর আর নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।
তাছাড়া যশোর শহরের ভিতরে ২.১ কিলোমিটার রাস্তায় ৬৯ লাখ টাকায় ডিভাইডার তৈরিতেও চলছে বড় ধরনের অনিয়ম। রাস্তার মাঝে ডিভাইডার তৈরির কাজ করা হচ্ছে কোনো ধরনের বেজ তৈরি না করেই। পিচের রাস্তার ওপরে গুটি কতক রড হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার সাথে দেয়া হচ্ছে ঢালাই। এসব ডিভাইডারে যানবাহনের সামান্যতম আঘাত লাগলেই ভেঙে পড়ছে। তবে যশোর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. মুয়াজ্জেম হোসেন সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
তবে এলাকার জনরোষ থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো যশোর পৌরসভার ভিতরে রাস্তায় পাঁচটি ব্রিজ উপহার দিয়েছে। এ পাঁচ ব্রিজের নির্মাণ খরচ প্রায় কোটি টাকা। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্রিজগুলো করে দিচ্ছে বিনা পয়সায়।
প্রথম থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময়ে রাস্তার কাজ শুরু করতে না পারায় যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-মাগুরা সড়কে যান চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হয়। এসব সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা পড়ে সীমাহীন দুর্ভোগে। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে তড়িঘড়ি করে যেনতেন কায়দায় কাজ শুরু করে। কিন্তু যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজের সময় বর্ধিত করেন। এর পরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেনতেন কায়দায় কাজ সমাপ্ত করেন। কিন্তু মহাসড়ক নির্মাণের কাজ এখনো বুঝিয়ে দেয়নি সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে। রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তাগুলো আবারো নষ্ট হয়ে গেছে।
এর আগেও এসব রাস্তায় প্রতিবছর বরাদ্দ থাকলেও দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়। ফলে বছর যেতে না যেতেই রাস্তাগুলো আবার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরুর প্রথম থেকেই নানা অনিয়মের কারণে এলাকার মানুষের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় জনদুর্ভোগ বেড়েছিল বহুগুনে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি নষ্ট হওয়া রাস্তা বাদ দিয়ে ভালো রাস্তাগুলো আগেই খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছিল। ফলে বেশি ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।
তাছাড়া মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকে কাজ শুরু করায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করাও সম্ভব হবে না বলে জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সওজর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। বিলম্ব হওয়ার কারণে হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা বৃষ্টিসহ নানান প্রকৃতিক দুর্যোগকে দায়ি করেছিলেন।
এসময়ে সংবাদ প্রকাশ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছেও সড়ক ও জনপথের যশোর নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুয়াজ্জেমের কাছে নষ্ট রাস্তা ফেলে রেখে ভালো রাস্তা আগেই খোড়াখুড়ির বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেছিলেন, বেশি ভাঙা রাস্তাগুলোর মাটি নিয়ে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রাস্তা বেশি নষ্ট হওয়ার কারণ ও সেখানে কোন প্রক্রিয়ায় রাস্তা নির্মাণ করলে রাস্তা দীর্ঘস্থায়ী হবে তা জানার জন্যই ল্যাবে মাটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাই বেশি ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। ল্যাবের টেস্ট আসলে সব শেষে অধিকতর নষ্ট রাস্তাগুলো নির্মাণ করা হবে। এক পর্যায়ে সেই অধিকতর নষ্ট রাস্তাগুলোও নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই আবার নষ্ট হয়ে পড়েছে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, কাজ পাওয়া প্রকৃত ঠিকদার যশোরের স্থানীয় কিছু ঠিকাদারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। মূল ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাজ করলে রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম কম হতো। তাছাড়া যশোর থেকে মাগুরা, যশোর থেকে নড়াইল, যশোর থেকে মনিরামপুর পর্যন্ত প্রিয়েডিং ম্যান্টেইনেন্স প্রগ্রাম (পিএমপি) বাবদ বরাদ্দের কিছু অংশ হলেও তা বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবারও প্রিয়েডিং ম্যান্টেনেন্সের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যশোর-অভয়নগর, যশোর-বেনাপোল সড়কে ৬৬৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তা পুনিঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে অভয়নগর রাজঘাট পর্যন্ত রাস্তায় দুটি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ দেয় ৩৫৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে রাস্তা নির্মাণের জন্য চুক্তি হয় ৩০৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে সদর উপজেলার ঘুনির রাস্তার মোড় পর্যন্ত ১৫৭ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যে রাস্তাটির কাজ পায় মাহাবুব ব্রাদার্স ও জয়েন্ট ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঘুনির রাস্তার মোড় থেকে রাজঘাট পর্যন্ত ১৪৭ কোটি ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকার কাজ পায় তমা কনস্ট্রাকশন। এ রাস্তা নির্মাণে উদ্বৃত্ত আছে ৫৭ কোটি টাকা। রাস্তা তৈরির সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় ২০১৯ সাল পর্যন্ত। বেনাপোল থেকে যশোর পর্যন্ত দুটি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ পায় ৩৭৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের ১ এর অধিভুক্ত যশোর দড়টানা থেকে গদখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার ১২৯ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার কাজ পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড। গদখালী থেকে বেনাপোল জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৮.২ কিলোমিটার রাস্তায় ১৩৭ কোটি ২৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা চুক্তিতে কাজটি পায় তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড ও মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড। দুটি প্রকল্পে কাজের চুক্তি হয় ২৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। রাস্তা তৈরির শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ অক্টোবর ২০২০। এ রাস্তা নির্মাণে উদ্বৃত্ত ছিল ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যশোর-মাগুরা ও বেনাপোল বাইপাস সড়কে বরাদ্দ হয় ১৫ কোটি টাকা। একই সময়ের মধ্যে কেশবপুর-সরসকাঠি-কলারোয়া, কেশবপুর-বেতগ্রাম, পালবাড়ি-বোর্ড অফিস-মনিহার, যশোর-ঝিনাইদহ, মদনপুর-ত্রিমোহনী সড়কে ম্যান্টেনেন্স বাবদ আরো ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সড়কগুলোতে মেন্টেনেন্সের কাজ করতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
অপরদিকে যশোর-খুলনা সড়কের দুটি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। যশোর-বেনাপোল সড়কের দুটি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার গোলাম সরোয়ার বলেন, “রাস্তা তৈরি করার মাস খানেকের মধ্যে মেডিকেল কলেজের সামনে রাস্তা দেবে গিয়ে এক ফুট গর্ত হয়ে গিয়েছে। অতি নিম্নমানের উপাদান দিয়ে রাস্তা তৈরির ফলে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে। প্রতিবছর সরকার রাস্তা সংস্কারের জন্য বিপুল পরিমাণের অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদাররা দায়সারা কাজ করে টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। যে কারণে রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই আবার সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”
অভয়নগর প্রেমবাগ এলাকার, নজরুল ইসলাম, শেরেকুল ইসলাম, আব্দুল আজিজসহ একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তা তৈরি করা নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন জনগণের সাথে তামাশা করছে। সেই আগের পুরাতন-খোঁয়ার, নিম্নমানের বালুর সাথে নতুন কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করেছে রাস্তা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থায়ী অফিসে কিছু নতুন পাথর রেখে দিয়েছিল। সেই নতুন উপাদানের সাথে পুরাতন রাস্তার ওয়েস্টেজ রিসাইক্লিং করে পুনরায় রাস্তায় দিয়েছে। আর নতুন পাথরগুলো আবার অন্য স্থানে নিয়ে গেছে ঠিকাদার। যে কারণে রাস্তায় যা হওয়ার তাই হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ না হতেই আবার নষ্ট হয়ে গেছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ম্যাজোর মোহনের কাছে রাস্তা তৈরি শেষ হতে না হতেই নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অতিরিক্ত যানবাহন ও অতিরিক্ত লোডের কারণে রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তবে তিনি রাস্তায় নিম্নমানের বালু, ইটের খোঁয়া,পাথর, বিটুমিন ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।”
তাহের ব্রাদার্স (প্রা.) লিমিটেডের ম্যানেজার প্রকৌশলী ইমদাদুল হকের মুঠোফোনে বার বার সংযোগ দিয়েও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে মাহাবুব ব্রাদার্সার প্রকল্প ম্যানেজার মাসুদুর রহমান জোয়ারদারের কাছে কাজের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওয়ার্ক অর্ডারে যেভাবে কাজের নির্দেশনা আছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি।”
পুরাতন পাথর-খোয়া দিয়ে নতুন করে রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, যদি পুরাতন খোয়া-পাথর ব্যবহার না করা হয় এত পাথর-খোঁয়া বাংলাদেশে কোথায় ও পাওয়া যাবে না। তাই সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে রাস্তার পুরাতন-পাথর খোয়া কিনে নিয়ে সেগুলোর সাথে কিছু নতুন পাথর-খোয়া দিয়ে আবার নতুন করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।”
তবে, রাস্তার মান নিয়ন্ত্রণে এতে কোনো ঘাটতি হয়নি বলে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের যশোরে পাঁচটি মহাসড়াকে বরাদ্দ পায় ৫৫ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এসব বরাদ্দের মধ্যে ছিল ২১ কোটি ২২ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে নাভারণ-ইলিশপুর সড়ক। সাত কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজারহাট চুকনগর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। ১০ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে রাজারহাট চুকনগরের বাকি ১৮ কিলোমিটার। পালবাড়ি থেকে মুড়ালী পর্যন্ত ছয় কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কেশবপুর-থেকে সরষকাঠি, কেশবপুর-বেতগ্রাম, মদনপুর কলেজ মোড় থেকে ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত সাড়ে সাতাশ কিলোমিটার সড়কে আট কোটি ৬২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল।
রাস্তা নতুন করে নির্মাণের জন্য ১২ নভেম্বর ২০১৫ সালে যশোর থেকে চুকনগর সড়কের কাজ পেয়েছিল খুলনার মাহাবুব ব্রাদার্স। কাজ শেষ হয় ২৮ মার্চ ২০১৬ সালে। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই যশোর রাজার হাট থেকে চুকনগর কাজ পেয়েছিলেন সিলেটের মেসার্স জামিল ইকবল। কাজ সমাপ্ত করেন ২০১৫ সালের ৩১ নভেম্বর। ২০১৬ সালের ৭ মার্চ পালবাড়ি-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী সড়কের কাজ পেয়েছিলেন যশোরের মঈনউদ্দিন বাঁশি। কাজটি শেষ করেন ২০১৬ সালের ৪ জুলাই। কিন্তু সেই রাস্তা গত একবছরে নষ্ট হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। গত বছরেই সেই ভাঙা রাস্তার ওপর ইটের সোলিং দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করছে।
২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর কেশবপুর-সরষকাঠি, কেশবপুর-বেতগ্রাম, মদনপুর কলেজ মোড়-ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত কাজ পেয়েছিল বাগেরহাটের মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। কাজ শেষ করে ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট। সে রাস্তাও ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।
মহাসড়ক নির্মাণের নানা অনিয়মের বিষয়ে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. মুয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাস্তায় যে সমস্ত ট্রাক বা লরি চলে তার অধিকাংশ ওভারলোড নিয়ে রাস্তায় চলে। যে কারণে এসব রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বার বার পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।”
তবে স্থানীয় ইটের ভাটার আমা ইট, বা ওয়েস্টেট ইট , নিম্নমানের বালু, পাথর, বিটুমিন দিয়ে রাস্তা তৈরির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাস্তা তৈরির ওয়ার্ক ওর্ডারেই বলা আছে রাস্তার পুরাতন ওয়েস্টেস দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে পারবে? পুরাতন ওয়েস্টেসের সব মালামালই তো আর নষ্ট হয়ে যায় না। ওয়েস্টেসের কিছু মালামাল ভালো থাকে? সেগুলোর সাথে নতুন করে মালমাল সংযুক্ত করে নতুন করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের অবশিষ্ট ৭৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কোন পন্থায় ব্যয় করা হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিল, রাজস্ব ব্যয় ও বিবিধ ব্যয় বাবদ এসব টাকা ব্যয় করা হবে। রাস্তার পুরাতন ওয়েস্টেস বিক্রির ৩০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা সরকারি ফান্ডে জমা থাকবে। তাছাড়া ঠিকাদাররা যথেষ্ট আন্তরিক। আমার ও যশোর পৌর মেয়রের অনুরোধে বিনামূল্যে তারা প্রায় কোটি টাকা মূল্যের পাঁচটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিচ্ছে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ