বগুড়ার খান্দার এলাকার বাসিন্দা মন্টু মিয়া। তার গরুর দাম ছিল ৯১ হাজার টাকা। তার চামড়াটি বাড়ির ওপরে কেউ কিনতে আসেনি। শেষ পর্যন্ত তিনি সেই চামড়া স্থানীয় এতিমখানায় দান করেছেন।
বগুড়ার খান্দার এলাকার বাসিন্দা মন্টু মিয়া। তার গরুর দাম ছিল ৯১ হাজার টাকা। তার চামড়াটি বাড়ির ওপরে কেউ কিনতে আসেনি। শেষ পর্যন্ত তিনি সেই চামড়া স্থানীয় এতিমখানায় দান করেছেন।
বগুড়ার খান্দার এলাকার বাসিন্দা মন্টু মিয়া। তার গরুর দাম ছিল ৯১ হাজার টাকা। তার চামড়াটি বাড়ির ওপরে কেউ কিনতে আসেনি। শেষ পর্যন্ত তিনি সেই চামড়া স্থানীয় এতিমখানায় দান করেছেন।
একই এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ শেখ। কোরবানির গরু কিনেছিলেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়াটির দাম বলে মাত্র ৩০০ টাকা। জোরাজুরি করে সেই দাম ওঠে ৪০০ টাকায়। এরকম অভিজ্ঞতা জানালেন আরও অনেকজন।
এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম একেবারেই কম বলা চলে। যারা কোরবানি দিয়েছেন, তারা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাননি না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া পানির দরে বিক্রি হয়েছে। এলাকাভেদে ৭০ হাজার থেকে লাখ টাকার ওপরে কেনা গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর পানির দামের চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছে ছাগলের চামড়া। ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
অধিকাংশ কোরবানিদাতা দ্বিতীয় ক্রেতা এলাকায় না আসায় বাধ্য হয়েই কমমূল্যে চামড়া বিক্রি করেন। কেউ কেউ রাগ করে ব্যবসায়ীদের চামড়া না দিয়ে এতিমখানায় পৌঁছে দিয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য যে বগুড়ায় উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং ভালো মানের গরুর চামড়া সংগ্রহ হয়ে থাকে।
শহরের চেলোপাড়ার শফিকুল ইসলাম নামের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, তারা চার ভাগে প্রায় ৬২ হাজার টাকায় একটি গরু কোরবানি দেন। ওই গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ২৫০ টাকায়। তার প্রতিবেশী আমিনুল তার ৬৪ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া একই দামে বিক্রি করেছেন। তাদের এলাকায় একটু ছোট গরু হলে ১০০ টাকা এবং বড় হলে সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকা দাম দেওয়া হয়েছে।
ঈদের দিন দুপুরের পর শহরের বাদুড়তলা থেকে চকসুত্রাপুর পর্যন্ত চামড়ার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর চামড়া কেনাবেচা চলছে। নিম্ন দরে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় বিক্রেতাদের মুখে হাসি নেই। শুধু শহর নয়, বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ভটভটিসহ বিভিন্ন যানবাহনে চামড়া এনেছেন। ব্যবসায়ীরা ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা মূল্য দিচ্ছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল বাকী জানান, গত কয়েক বছর চামড়া ব্যবসা করে মহাজনের কাছে ২৮ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। তাই এবার সতর্কতার সঙ্গে চামড়া কিনেছেন। তিনি গরুর চামড়া ১০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে কিনেছেন।
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার বলেন, ট্যানারি-মালিকদের কাছে বগুড়ার ব্যবসায়ীদের পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ঈদের আগে সেই বকেয়া পাওনা পরিশোধ করেননি মালিকেরা। তাই এবার চামড়া কিনতে পুঁজি সংকটে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অগ্রিম পর্যাপ্ত টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে এবার চামড়ার দাম কম।
এদিকে সিন্ডিকেটরা সরকার নির্ধারিত দরের তোয়াক্কা না করে নামমাত্র দরে চামড়া বিক্রি করতে জনগণকে বাধ্য করেছে। এদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে শহরের সাতমাথায় তারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন।