News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১১ জুলাই ২০১৫
আপডেট: ০৭:৫৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শুধু নারীদেরই কেন, পুরুষদেরও তো হত্যা করা যায়!

শুধু নারীদেরই কেন, পুরুষদেরও তো হত্যা করা যায়!

২৮ বছর বয়সী তুর্কি নারী সিলেম কারাবুলুত পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে প্রশ্ন রাখেন-  শুধু নারীদেরই হত্যা করা হবে কেন? পুরুষদেরও তো হত্যা করা যায়!

জবানবন্দিতে এমন বিস্ফোরক আর নারীবাদী বিক্ষোভের বয়ান অবশ্যি এমনি এমনি বেরিয়ে আসেনি সিলেমের কণ্ঠ থেকে। তিনি নিজে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছেন।

স্থানীয় পত্রিকা হুররিয়েত জানায়, স্বামীর মারধরে আর অনৈতিক প্রস্তাবে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে গত বুধবার বিকেলে স্বামীকে গুলি করে হত্যার পর সিলেম নিজেই পুলিশ ডেকে এনে ধরা দেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে নেওয়া হয়। এসময় তার হাবভাব ছিল বেপরোয়া। হ্যান্ডকাফ পরা সিলেমকে দুইজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে যখন নিয়ে যায় তখন তার টিশার্টে ইংরেজিতে লেখা স্লোগানটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এতে লেখা ছিল, “প্রিয় অতীত, সকল শিক্ষার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। প্রিয় ভবিষ্যত, আমি প্রস্তুত (ডিয়ার পাস্ট, থ্যাঙ্কস ফর অল দ্য লেসনস। ডিয়ার ফিউচার, আই অ্যাম রেডি)।”

এসময় তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার প্রতি লোকজনের সমর্থনের জবাব দেন।

দক্ষিণ তুরস্কের আদানা এলাকার এ ঘটনায় সমগ্র তুরস্ক এখন তোলপাড়। স্টপ ভায়োলেন্স এগেইনস্ট ওমেন নামের একটি এনজিওর তথ্যমতে, ২০১৪ সালে দেশটিতে ২৮৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে বিভিন্ন ঘটনায়। আর ২০১৫ সালে জানুয়ারি থেকে এখন চলতি জুলাই পর্যন্ত সময়ে এরই মধ্যে ১৬০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তুরস্ক সরকারও স্বীকার করছে যে দেশটিতে নারীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা একটি গুরুতর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী বা নিকটাত্মীয়দের আক্রোশের শিকার হচ্ছে তারা।  

আদালতে সিলেম জানান, স্বামী হাসান কারাবালুত (৩৩) প্রায়ই তাকে মারধর করতেন। এছাড়া তাকে পতিতাবৃত্তি এবং মাদক ব্যবসায় বাধ্য করতেও চাইতেন। সবশেষে তার নিজের জীবন সংশয়ও দেখা দিয়েছিল স্বামীর কাছে।

কারাবুলুত দম্পতির দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

তুরস্ক তোলপাড় করা এ ঘটনাকে অনেকেই এক ধরনের ‘অনার কিলিং’ বলে চিহ্নিত করছেন। দেশটিতে স্বামীদের হাতে স্ত্রীদের নিহত হওয়ার ভুড়ি ভুড়ি ঘটনা থাকলেও স্ত্রীর হাতে কোনও স্বামী নিহত হয়েছেন- এমন ঘটনা অতি বিরল।

ভারত-পাকিস্তানসহ অনেক দেশেই পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে প্রেমঘটিত বিয়ের পাত্রপাত্রীদের হত্যা করে থাকে স্বজনরা। মূলত উঁচু-নিচু জাত বা ধনী-গরীব দ্বন্দ্বের জেরে ঘটিত এসব জঘন্য অপরাধ মিডিয়ায় অনার কিলিং হিসেবে পরিচিত। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/একে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়