নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির টানা তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে সালাউদ্দিন (৪৮) ও তার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে ছাত্র সৌরভ হোসেনের (১২) মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস(দমকল বাহিনীর) সদস্যরা লাশ দুটি উদ্ধার করে।
এর আগে সন্ধ্যার দিকে ওই ইউনিয়নের ফলাহারী গ্রামের বজল মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সালাউদ্দিন বাড়ির উপজেলার পদুয়া গ্রামের হাজী আলী আহমদের ছেলে। তার ছেলে সৌরভ স্থানীয় করমবক্স আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেলে সালাউদ্দিন স্থানীয় একটি ইরি-বোরো ধানখেতে নিজেদের সেচপাম্প দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছিলেন। এসময় তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে সৌরভ তাকে সহযোগিতা করতে সেখানে যায়। সন্ধ্যায় সেচ দেয়া শেষে বাড়ি ফেরার আগে সৌরভ পায়ের কাঁদা ধোয়ার জন্য পাশের একটি পুকুর পাড়ে যায়। এসময় সে পুকুরের পাড়ে পুঁতে রাখা বৈদ্যুতিক খুঁটির টানা তার ধরে নিচের দিকে ঝুলে পা ধোঁয়ার সময় তারটি বিদ্যুৎ লাইনের উপরে থাকা মূল তারের সঙ্গে লেগে বিদ্যুতায়িত হয়। পিতা সালাউদ্দিন ছেলেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যান।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, বাবা-ছেলেকে পানির মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে বিদ্যুৎ লাইনটি বন্ধ করতে পল্লী বিদ্যুতের কবিরহাট ও নোয়াখালী অফিস একাধিকবার ফোন করে ঘটনাস্থলে আসার জন্য জানানো হলেও তারা আসেননি। এসময় আশপাশের লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এলেও ভয়ে মরদেহ উদ্ধারে পুকুরে নামতে পারেনি। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুটি লণাশ পুকুরেই পড়ে ছিল। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা সদর থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এরপর রাত পৌনে ৯টার দিকে পল্লী বিদ্যুতের কবিরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।
গাফিলতির বিষয়ে জানতে চাইলে কবির হাট পল্লী বিদ্যুতের সহকারী ব্যবস্থাপক( ডি জি এম) গোপাল চন্দ্র শিব বলেন, “পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেয়া তারের সাথে টানা তারের সংযোগ থাকার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঠিকাদার কাজটি করেছে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করে বিস্তারিত জানাতে পারবো।”
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা হাসান জানান, ফায়ার বিগ্রেডের উদ্ধারকারী দল এসে লাশ উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, পরিবারের আপত্তি না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।