আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেবে দেশি তরুণদের ড্রোন
সিলেট: ড্রোন দিয়ে কেবল শত্রুর ওপর ভয়াবহ হামলা নয় কিংবা কেবল আকাশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছবি তোলা নয়, ড্রোন দেবে আবহাওয়ার সব তথ্যও। তবে এজন্য বিদেশ থেকে ব্যয়বহুল কোনো ড্রোন নিয়ে আসার দরকার নেই। সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির (এমইউ) তরুণদের বানানো ওয়েদার ইনফর্মার ড্রোনই দিতে পারবে আবহাওয়ার সব খবর।
দেশের তরুণদের তৈরি এই ড্রোন (যাত্রীবিহীন এবং দূর নিয়ন্ত্রিত ক্ষুদ্রাকৃতির উড়োজাহাজ) একইসাথে মাপতে পারবে নিউক্লিয়ার রেডিয়েশনও।
শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি এ ড্রোনের নাম দেওয়া হয়েছে ওয়েদার ইনফর্মার ড্রোন-১। প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক ও এমইউ’র ইইই বিভাগের লেকচারার সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল নিউজবাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাবিল বলেন, “ড্রোনটি এয়ারকোয়ালিটি, হিউমিডিটি, টেমপারেচার, ইউভি ইনডেক্স ও বাতাসের চাপ পরিমাপ করতে সক্ষম। এছাড়া এ ড্রোনে গাইগার মুলার কাউন্টার লাগানোর ব্যবস্থা আছে। এর ফলে ড্রোনটি নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন মাপতে পারবে। এতে একটি ড্রপিং ম্যাকানিজম লাগানো আছে, ফলে এটি বিভিন্ন জিনিসপত্রও বহন করতে এবং সঠিক জায়গায় গিয়ে তা ফেলতে পারবে।”
তিনি আরো বলেন, “আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করতে অনেক সময় বেশ উঁচু জায়গাতে উঠতে হয়। আবার বড় কোনো এলাকার বিভিন্ন জায়গার আবহাওয়ার তথ্য নিতে হয়। এ ধরনের কাজে ড্রোন অনেক কাজে দেয়। বড় কোনো আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের সময় যে সব এলাকায় মানুষের প্রাণনাশের ঝুঁকি থাকতে পারে, সে সমস্ত জায়গায় বাতাসের বিভিন্ন উপাদান ও ক্ষতির বিশদ তথ্যও এ ড্রোন নিতে পারবে। নিউক্লিয়ার রেডিয়েশনও পরিমাপ করতে পারবে।”
তিনি বলেন, “এ ড্রোনটির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের সফটওয়্যারটিও আমাদের নিজেদের তৈরি। এরই মধ্যে ড্রোনটি বেশ কয়েকবার আকাশে ওড়ানো হয়েছে এবং সব ক্ষেত্রেই এটি সঠিক ও চমৎকারভাবে কাজ করেছে।”
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব সম্পর্কে তরুণ গবেষক নাবিল বলেন, “প্রকল্পটি বলা যায় খেলনা বানানোর মতোই ছিল। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের হাতে কিছু খেলনাই তুলে দিয়েছিলাম বলা যায়, বলছিলাম দেখো কী করতে পারো। তারা কিছু খেলনা এবং ড্রোনের বাতিল হয়ে যাওয়া মোটরগুলোকে কাজের উপযোগী করে তুলে এ প্রজেক্ট শেষ করেছে। ভবিষ্যতে তারা আরো অসাধারণ কিছু করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
প্রকল্পের অন্যান্য গবেষকরা হলেন, একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আখলাকুজ্জামান আশিক, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জীবনচন্দ্র দাশ, আব্দুর রহমান চৌধুরী, রুমন হোসাইন, মিথুন ধর ও হাবিবুর রহমান।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম