‘রং হেডেড’ জাফরুল্লাহকে সতর্ক করলেন ট্রাইব্যুনাল
ঢাকা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘রং হেডেড’ উল্লেখ করে আদালত প্রসঙ্গে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
তার নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করে রায়ে বিচারক বলেন, ‘রং হেডেড’ ব্যক্তি ছাড়া এ ধরনের মন্তব্য কেউ করতে পারে না।
এর মধ্য দিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে জাফরুল্লাহকে অব্যাহতি দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্যাইব্যুনাল মঙ্গলবার সকালে এ আদেশ দেন।
আদেশের পর্যবেক্ষণে তাকে ‘এক্সট্রিমলি রং হেডেড পারসন’ বলেও উল্লেখ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
ভবিষ্যতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের মন্তব্য করার ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহকে আরও বেশি সতর্ক হতে বলেন আদালত।
তিন বিচারককে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলাসহ ঔদ্ধত্যপূর্ণ নানা কটূক্তি করায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়েছিল।
আদালতে জাফরুল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।
ট্রাইব্যুনাল থেকে বের হয়ে বাসেত মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ভবিষ্যতে আদালত ও বিচারকদের নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে জাফরুল্লাহকে কঠোরভাবে সর্তক করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আদালত বলেছেন তার মতো শিক্ষিত ও সচেতন ব্যক্তি এ ধরনের মন্তব্য করতে পারে না। শুধুমাত্র অবিবেচকরাই বিচার বিভাগ নিয়ে কটূক্তি করতে পারে।
বাসেত মজুমদার বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, প্রত্যেকের কথা বলার স্বাধীনতা থাকলেও তারও একটা সীমা আছে। কথা বলার ক্ষেত্রে সেই সীমা অতিক্রম করা যাবে না।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৯ আগস্ট বিচারকদের নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গত ১২ জুলাই বিচারকদের নিয়ে কটূক্তি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ট্রাইব্যুনালে স্বশরীরে হাজির হয়ে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন বিচারককে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ বলায় গত ৬ জুলাই গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ ও তিন মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা আনার আবেদন করেন।
গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের আহবায়ক কামাল পাশা চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, মুক্তিযোদ্ধা আলী আসগর, মুক্তিযোদ্ধা শেখ নজরুল ইসলাম এবং গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী এফ এম শাহীন ট্রাইব্যুনালে এ আবেদন করেন।
গত ১০ জুন আদালত অবমাননার দায়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে এক ঘণ্টা এজলাসকক্ষে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকার দণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে একমাসের কারাদণ্ডের সাজা দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
পরে ট্রাইব্যুনাল থেকে বাইরে বের হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রায়কে তিনজন বিচারকের মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ বলে কটূক্তি করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/আইএ/এফই/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম